লকডাউন প্রত্যাহারের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে চলছে লকডাউন ও সোস্যাল ডিসটেন্স। এতে ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। থমকে গেছে অর্থনীতির চাকা। আর এমন পরিস্থিতিতে লকডাউনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে বিক্ষোভ হয়েছে।

দেশটিতে ‘স্টে অ্যাট হোম’ নির্দেশনা অমান্য করেই রাস্তায় নেমে এসেছেন হাজারো মানুষ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন স্থাপনার সামনে প্রতীকী বডিব্যাগ রেখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এমনকি কারো কারো হাতে ভারী অস্ত্রও দেখা গেছে।

সংবাদ সংস্থা ডেইলি মেইলের খবরে জানা যায়, সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটারে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যকে ‘স্বাধীন’ করার আহ্বান জানানোর পর থেকেই রাস্তায় নেমে এসেছেন বিক্ষোভকারীরা। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে ওকলাহোমা, টেক্সাস, ভার্জিনিয়া, মিশিগান, ফ্লোরিডা, ক্যালিফোর্নিয়া, কেন্টাকি, ওহিও, নর্থ ক্যারোলিনা ও মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে।

শনিবার টেক্সাসের ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের সামনে লকডাউন তুলে নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শত শত মানুষ। তাদের অনেকের হাতেই যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণের অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা ডা. অ্যান্থনি ফাউসিকে বহিষ্কারের দাবিতে প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছে, এমন সময়ে লকডাউন তুলে নেয়া হলে বেড়ে যেতে পারে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ। তবে আন্দোলনকারীরা বলছে, লকডাউনের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের আঘাত করা হচ্ছে।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় সরকার কিছু না বললেও টেক্সাস কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, তারাই হতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রে লকডাউন তুলে নেয়া প্রথম অঙ্গরাজ্য। আগামী সপ্তাহেই সেখানকার দোকানপাট খুলে দেয়া হবে।

ঘরে থাকার নির্দেশনা না মেনে লকডাউন-বিরোধী বিক্ষোভ আয়োজনের অভিযোগে শুক্রবার নিউ জার্সিতে আটক করা হয়েছে এক নারীকে।

শনিবার নিউ হ্যাম্পশায়ারের রাস্তায় নেমেছেন অসংখ্য মানুষ। ঘরে থাকার নির্দেশনা অমান্য করে রাস্তায় বেরিয়ে হৈ-হুল্লোড় করে তাদের বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।

এদিন বিশাল গাড়িবহর নিয়ে লকডাউন-বিরোধী মিছিল হয়েছে অ্যানাপোলিসে। তবে সামাজিক দূরত্ব রেখে সবাই গাড়িতে বসেই বিক্ষোভ করেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। ওই দলটি ম্যারিল্যান্ডের সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, স্কুল, ধর্মীয় স্থাপনাসহ সব ধরনের কার্যক্রম পুনরায় চালুর দাবিতে গভর্নরের কাছে অনলাইনে পিটিশনও জমা দিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ভার্জিনিয়ার ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের সামনে একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছে অন্তত তিনটি দল। ‘স্টে অ্যাট হোম’ অমান্য করে শুক্রবারও জড়ো হয়েছিল তারা। তাদের অনেকেই মাস্ক-গ্লাভস না পরেই বিক্ষোভে অংশ নেন।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৩৮ হাজার ৯২৩ জন। মারা গেছেন ৩৯ হাজার ১৫ জন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)