প্রত্যাহার করা হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সার্কেল এএসপিকে
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বেও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা জুবায়ের আহমেদ আনসারীর জানাজায় লোক সমাগমের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে না পারায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের সহকারী পুলিশ সুপারকে (সার্কেল এএসপি) প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে পুলিশ সদর দফতর।
পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. সোহেল রানা জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এআইজি সোহেল রানা জানান, এ ঘটনায় গঠিত কমিটির সদস্য ও প্রতিবেদন প্রদানের সময় পরবর্তীতে জানিয়ে দেয়া হবে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিজ বাসভবনে মাওলানা আনসারীর মৃত্যুর পরই এমন লোক সমাগমের বিষয়টি আঁচ করা যাচ্ছিল। কিন্তু পরিস্থিতির এমন আশঙ্কা করলেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় সরাইলের ওসি, সার্কেল এএসপি এবং একজন ইন্সপেক্টর (তদন্ত) প্রত্যাহার করা হয়েছে।
যদিও সরাইল উপজেলার বেড়তলা এলাকার জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা মাঠে মাওলানা আনসারীর জানাজায় জনস্রোত নামার বিষয়ে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, পুলিশের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু জানাজায় শরিক হওয়া থেকে মানুষকে নিভৃত করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনার পর সরাইলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহাদাত হোসেন বলেন, ‘জানাজায় এত মানুষ হবে আমরা বুঝতে পারিনি। লোকজন আসতে শুরু করার পর আমাদের আর কিছু করার ছিল না।’
করোনার বিস্তারের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার একদিন আগে বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) ‘গোটা দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করে সরকার। শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাওলানা আনসারীর জানাজায় হাজার হাজার মানুষকে শরিক হতে দেখা যায়। লকডাউন উপেক্ষা করে এত মানুষের সমাগম করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিকে অনেক বেশি বাড়িয়ে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।
জানাজার ছবি ভাইরাল হতেই বিভিন্ন পর্যায়ে সমালোচনা শুরু হয়। এমন পরিস্থিতিতে অনেকে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন।
যদিও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, মাওলানা আনসারীর জানাজায় মানুষের যে ঢল, তা আটকানোর মতো পরিস্থিতি ছিল না। মানুষ বোধসম্পন্ন হলে বোঝানো সম্ভব। বোধহারা হলে কিছুই করার নেই। প্রশাসন চেষ্টা করেছে। কিন্তু জানাজায় শরিক হওয়া থেকে মানুষকে নিভৃত করা সম্ভব হয়নি।
অবশ্য, এই ঘটনাটির পর সরাইল উপজেলার বেড়তলাসহ আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষকে ১৪ দিন ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।