করোনার ভয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে প্যাথলজিষ্ট
বাগেরহাটের করোনা সন্দেহকারী রুগীকে পরিার জন্য নমুনা সংগ্রহের কথা শুনে হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে প্যাথলজি বিভাগের এক কর্মকর্তা। গত ৮দিন যাবত পালিয়ে আত্নগোপনে থাকা মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (এমটি) অনিমেষ শাহা না থাকায় বন্ধ রয়েছে প্যাথলজি বিভাগের পরিক্ষা-নিরিক্ষার সকল কার্যক্রম। আর তিনি পালিয়ে থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে চিকিৎসারত ও বিভিন্ন দিক থেকে আসা সাধারন রুগীরা। তবে কাউকে না জানিয়ে সরকারের জরুরী সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান খেকে দীর্ঘ ১১দিন পালিয়ে থাকা এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যাবস্থা নেয়নী কর্তৃপ। এ নিয়ে হাসপাতাল জুড়ে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
খুলনা বিভাগের তথা দক্ষিনাঞ্চলের বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর নগরী মোংলা উপজেলার প্রায় ২ লাখ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৯৯৮ সালের ২৩ মে তৈরী করা হয় ৫০ সয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র এ স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২৫ জন চিকিৎসক থাকার নিয়ম থাকলেও আছে মাত্র মাত্র ১০/১২জন। এর মধ্যে ৫জন চিকিৎসক রীতিমত অফিস করছে আর বাকিরা আছে কাগজে-কলমে। এখানে প্যাথলজি বিভাগে ৩জন মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট থাকার স্থলে আছে মাত্র ১জন। সরকারের স্বাস্থ্য শাখার লোকবল কম থাকায় এ শাখায় দীর্ঘদিন যাবত একজন (এমটি) দিয়ে চলে আসছিলো হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের কার্যক্রম। কিন্ত সারা দেশ ব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে দেশের সকল স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসকসহ অন্যান্য শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ছিল করা নির্দেশনা। তার মধ্যেও বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের কঠোর নির্দেশনা থাকা সত্বেও মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র’র এ শাখার একমাত্র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অনিমেষ শাহা অফিসে আসা বন্ধ করে দেয়। অফিসে আসলেও তিনি প্যাথলজি বিভাগে না বসে অন্যাত্র ঘুরে বেড়াতেন বলে অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
গত ৭ এপ্রিল মোংলা পোর্ট পৌর শহরের খানজাহান আলী সড়কের হাকিম হাওলাদারের ভাড়াটিয়া শাহিনুর আক্তার নামের এক গৃহবধু করোনা ভাইরাস সন্দেহে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের র চিকিৎসকদের নির্দেশনা দেন উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশী শাহিনুর আক্তারকে আইসোলেশনে রেখে নমুনা সংগ্রহ করে তা খুলনা মেডিকেলে পাঠানোর জন্য বলে। এ খবর শুনেই মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (এমটি) কর্মকর্তা অনিমেষ শাহা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। দীর্ঘ ১১দিন প্যাথলোজি বিভাগ বন্ধ থাকায় দুর দুরন্ত থেকে আসা রুগীরা পরছে চরম বিপাকে। আতœগোপনে থাকা অনিমেষের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নিচ্ছেনা কর্তৃপক্ষ বলেও স্থনীয়দের অভিযোগ।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জীবিতেষ বিশ্বাস জানায়, কয়েকদিন যাবত প্যাথলোজিস্ট অনিমেষ শাহা হাসপাতালে অনুপস্থিত। সম্ভবত করেনা ভাইরাস সংক্রান্ত বিষয় একটু ভীত হয়ে পড়েছে। মোবাইল ফোনও বন্ধ, তবে তার স্ত্রীর ফোনে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
এব্যাপারে বাগেরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ হুমায়ুন কবির বলেন, ১১দিন পালিয়ে থাকার ঘটনাটি তার জানা নাই, তবে ১৬ এপ্রিল দুপুরে অনিমেষ শাহার সেচ্ছায় অবসরের একটি আবেদন পেয়েছি। সেচ্ছায় অবসরের সময় হয়েছে কিনা বা সরকারের এ জাতীয় দুর্যোগ মুহুর্তে পালিয়ে থাকার বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে, তারাই ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন।
মোংলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার ও জেলা পরিষদের সদস্য শেখ আঃ রহমান জানান, অনিমেষ শাহা নিয়মানুযায়ী (সেচ্ছায় অবসরে) যেতে পারে কিন্ত দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক মানুষের জন্য তার হাসপাতালে দায়ীত্ব পালন করতে হবে। যদি না করে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবী জানাবো আমরা।
স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেনোলজিষ্ট অনিমেষ শাহার মুঠো ফোনে বার বার চেষ্টা করা হলেও তার (০১৭১৬৪২৩০০২)ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।