ডুমুরিয়ায় অধিক লাভের আশায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মোসাদ্দেক হোসেনের নিকট থেকে জানা যায়, উপজেলায় ৩ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে আগামী চলছি মৌসুমে এই সূর্যমুখী ফুলের চাষ করবেন কৃষকেরা।এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার ও বীজ প্রণোদনার মাধ্যমে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় এ বছর ৩ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু হয়েছে।
কৃষকরা জানান, উঁচু ও পতিত জমিতে ধান চাষ খুব একটা লাভজনক নয়। ধান চাষ করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়,সেই টাকার ধান পাওয়া যায় না। তাই অন্যান্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখী চাষে বেশি লাভের প্রত্যাশা করছেন।
সূর্যমুখী ফুলের চাষ করলে ফুল থেকে তেল, খৈল ও জ্বালানি পাওয়া যায়। প্রতি কেজি বীজ থেকে কমপক্ষে আধা লিটার তৈল উপাদন সম্ভব। প্রতি হেক্টর ৭ মণ থেকে ১০ মণ বীজ উৎপাদন হয়। তেল উপাদন হবে প্রতি হেক্টরে ১৪০ লিটার থেকে ২০০ লিটার পর্যন্ত। প্রতি লিটার তেলের বাজার সর্বনিম্ন বাজার মূল্য ২৫০ টাকা। প্রতি হেক্টর জমিতে খরচ হয় সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ হাজার টাকা।
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস, ইউনিয়ন ও শরাফপু ইউনিয়নে ৩হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। উপজেলার সাহস , কুলটি , ও বিভিন্ন স্থানে উঁচু ও পতিত জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে।
ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়নের মোট ৩ হেঃ জমিতে হয়েছে। শরাফপুর, গ্রামের, কৃষক সরোয়ার সরদার, বলেন ‘আমার ৩ হেক্টর জমি আবাদ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। এই তিন হেক্টর জমিতে বীজ উৎপন্ন হবে ২০ মণ। এই ২০ মণ বীজ থেকে তেল হবে প্রায় ৪০০ লিটার। তেল বিক্রি করতে পারব ১ লাখ টাকার।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগামীতে আমি আরো ১৫ থেকে ২০ হেক্টর জমিতে এ ফুল চাষ করব বলে আশা করছি। আমাকে দেখে এলাকার অনেক কৃষকরা সূর্যমূখী ফু্লের চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’
খর্নিয়া ইউনিয়নের টিপনা গ্রামের কৃষক শেখ মঞ্জুর রহমান বলেন, ‘সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে তেল উৎপন্ন হয় তা স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্পন্ন। অলিভ ওয়েলের পরেই সূর্যমুখী তেলের অবস্থান। সোয়াবিন ও সরিষা ভোজ্য তেলের ঘাটতি পুরণ করবে সূর্যমুখী তেল।’
তিনি বলেন, ‘বেশি লাভজনক ফসল সূর্যমুখী। প্রথমবার কৃষকেরা সূর্যমূখী চাষ করে লাভবান হবেন বলে আশা করছি। আগামীতে উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ আরো বাড়বে।’
এ ব্যাপারে খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ( উদ্যান) মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলার ৯ উপজেলায় এবার ২শতাধিক বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। সূর্যমুখীর চাষ লাভজনক। এবার আমরা সূর্যমুখী চাষের জন্য কৃষকদের সার ও বীজ প্রণোদনা দিয়েছি। আগামীতে আরো বেশি পরিমাণে সূর্যমুখীর চাষ হবে বলে প্রত্যাশা করছি।’
তিনি আরো বলেন, উঁচু জমিতে ধান চাষ খুব একটা লাভজনক নয়। যার ফলে আমরা কৃষকদেরকে লাভজনক ফসল সূর্যমুখী, ভুট্টা আবাদ করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন।
Please follow and like us: