সদর হাসপাতালের কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট: চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত ২০ লক্ষ জনতা
সাতক্ষীরায় বিশ লক্ষাধীক মানুষের চিকিৎসা সেবার অন্যতম আশ্রয়স্থল সদর হাসপাতালের জন্য ক্রয় করা চিকিৎসা সামগ্রী গত কয়েক বছরের মধ্যেও কর্তৃপক্ষ ব্যবহার উপযোগী করেনি প্রতিদিনই শত শত রোগীর আগমন ঘটা এবং দিনে দিনে রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেলেও উন্নত এবং আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার মাধ্যমগুলো হাসপাতালে স্থাপন না করায় জেলাবাসি উন্নত চিকিৎসাসেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে চিকিৎসা সামগ্রী গুলো সিভিল সার্জন অফিসের বারান্দায় ও দোতালা সহ বিভিন্ন স্থানে পড়ে আছে রোগীরা চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ব্যবহারিত না হয়ে পড়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। জনমনে প্রশ্ন সরকার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের উন্নত সেবা এবং উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কোটি কোটি টাকা বরাদ্ধ পরবর্তী চিকিৎসা সামগ্রী প্রদান করেছে কিন্তু কেন উক্ত যন্ত্রপাতি পড়ে আছে। তবে কি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তহীনতা? নাকি মহল বিশেষের চক্রান্ত ? নাকি রোগীদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল বিমুখ করা? সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আধুনিক এবং উন্নত মানের চিকিৎসা ব্যবস্থার দ্বার উন্মুক্ত হোক, জনসাধারন সদর হাসপাতাল মুখি হোক, চিকিৎসার নামে যে মহলটি গরীব মানুষ তথা সাধারণ রোগীদের জিম্মী করছে সে পথ রুদ্ধ হবে। এমন ষড়যন্ত্র চক্রান্ত সদর হাসপাতালকে কেন্দ্র করে চলছে কিনা এমন প্রশ্ন রোগী ও সাধারণ মানুষের মুখে মুখে।
তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে ২০১৭-২০১৮ এবং ২০১৮ ও ২০১৯ অর্থ বছরে টেন্ডারের মাধ্যমে ক্রয় করা হয় কিছু সংখ্যক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হলেও উল্লেখযোগ্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে না, ব্যবহার না করা, রোগীদের সেবায় উন্মক্ত না করা চিকিৎসা সামগ্রী তথা যন্ত্রপাতির গুলোর মধ্যে এক্সেরে মেশিন, আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন, আইসিইউ ভেন্টিলেটর, এ্যানেসথিশিয়া মেশিন, উথত ভেন্টিলেটর, পেশেন মনিটর, ডিফাইবিলেটর, নেমুলাইজার মেশিন, সাকশন মেশিন, উল্লেখিত যন্ত্রপাতি রোগীদের জন্য, সদর হাসপাতালকে আধুনিক হাসপাতাল করার জন্য, প্রতিনিয়ত শত শত রোগীর উপস্থিতি এবং স্বাস্থ্যবান্ধব সরকারের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার ক্ষেত্র নিশ্চিত করবে সেখানে চিকিৎসা সামগ্রী গুলো পড়ে আছে অনুপোযোগী পরিবেশে সিভিল সার্জন অফিসের বারান্দায়, দোতালায়, সদর হাসপাতালের অভ্যন্তরে, সহ বিভিন্ন স্থানে আছে। যন্ত্রপাতি গুলো বাক্সবন্দী অথচ সেগুলো রোগীর চিকিৎসার জন্য। সূত্র জানায় উল্লেখিত যন্ত্রপাতির বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্য দপ্তর যাচাইমূল্য সহ মালামালের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যন্ত্রপাতি সমুহ বাক্সবন্দী অবস্থায় পড়ে থাকলে এবং ব্যবহার উপযোগী না করলে, অব্যবহৃত থাকলে পরবর্তী সময়ে তা ব্যবহারের অনুপোযোগী হতে পারে। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন হুসাইন সাফায়াতের সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান তিনি যোগদানের পর পরই বাক্সবন্দী অবস্থায় পড়ে থাকা চিকিৎসা সামগ্রী ব্যবহার উপযোগী ও সংযোজন করার অপরিহার্যতার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখেন। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের তদন্তে আসেন, এখনও পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় জানাইনি। তিনি স্বীকার করেন উল্লেখিত যন্ত্রপাতির উপস্থিতি সদর হাসপাতালের চিকিৎসার মান বহুগুন বৃদ্ধি পাবে। সদর হাসপাতালের চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয়ের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে দুদকের অনুসন্ধান ও মামলার বিষয়টি এক্ষেত্রে বাঁধা কিনা এমন প্রশ্নে তিনি জানান এ বিষয়ে তিনি অবগত নন যন্ত্রপাতি ক্রয়ের বিষয়ে যদি মামলা থাকে সে ক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগী করার, সংযোজন করার ক্ষেত্রে, সর্বপরি রোগীদের সেবার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা কোথায়? বাক্সবন্দী চিকিৎসা সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সে ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলে তা তো দৃশ্যমান থাকবে। প্রয়োজনে ব্যবহৃত মালামালের পৃথক তালিকা সংরক্ষন করা যেতে পারে। কিন্তু জনসাধারণ, রোগী সাধারণ কেন চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হবে এমন প্রশ্নের উত্তর মিলছে না । দেশের এই বর্তমান করোনা ভাইরাসের দুঃসময়ে আইসিইউ ভেন্টিলেটার সহ অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী বিশেষ অপরিহার্য, চিকিৎসা সামগ্রী পড়ে আছে তার ব্যবহার হচ্ছে না এমন বিষয়টি বিশ্বাস করার সুযোগ কতটুকু অথচ এটাই বাস্তবতা সদর হাসপাতালের জন্য ক্রয় করা চিকিৎসা সামগ্রী ব্যবহৃত হচ্ছে না। সাতক্ষীরার বিশ লক্ষাধীক জন সাধারণের চিকিৎসা সেবার অন্যতম পাথেয় সদর হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।