এবার কমবয়সীদের মধ্যে রূপ আনছে করোনাভাইরাস
লন্ডনে এক নবজাতকের শরীরে মিলেছিল করোনাভাইরাসের খোঁজ। সেই প্রথম লন্ডনে করোনা-আক্রান্ত হয় কোনও শিশু। শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে সদ্যজাত শিশুটিকে রাখা হয়েছিল আইসোলেশন ওয়ার্ডে, ভাগ্যগুণে পরে সে বেঁচে যায়। তবে ভাগ্য ভালো ছিল না ১৩ বছরের কিশোর ইসমাইলের। হাসপাতালে ভর্তির কয়েকদিনের মধ্যেই মৃত্যু হল তার।
লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে সোমবার মৃত্যু হয় ইসমাইল মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহাবের। ডাক্তাররা জানিয়েছেন তার শরীরে কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিল। তীব্র শ্বাসের সমস্যা হচ্ছিল ইসমাইলের। একটা সময়ের পরে সে চলে যায় কোমায়। ঠিকমতো চিকিৎসা শুরুর আগেই মৃত্যু হয় তার।
কিংস কলেজের অধ্যাপক নাথালি ম্যাকডারমট বলেছেন, ভাইরাসের সংক্রমণ গভীরে ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু বাইরে থেকে কোনও লক্ষণ বোঝা যায়নি। শুরুতে শারীরিক কোনও সমস্যাও ছিল না ইসমাইলের। তাই রোগ ধরতেই পারেননি তার পরিবারের লোকজন। উপসর্গ দেখা দেওয়ার পরেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তবে ততদিনে সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিয়েছিল। তীব্র শ্বাসকষ্টের সঙ্গে শরীরের একাধির অঙ্গ বিকল হতে শুরু করেছিল কিশোরের। কোনও ওষুধেই আর কাজ দেয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের লক্ষণহীন বাহকরাই সামাজিক স্তরে সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য দায়ী। সার্স-কোভি-২ ভাইরাল স্ট্রেন এমনভাবে নিজেদে বদলাচ্ছে যে সংক্রমণ হলেও তার উপসর্গ ধরা পড়ছে অনেক দেরিতে। রোগীর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতাও দেখা যাচ্ছে না। ফলে যতদিনে উপসর্গ ফুটে উঠছে, ততদিনে সংক্রমণ তার শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে অনেকটাই। ঠিক এমনটাই হয়েছে ইসমাইলের ক্ষেত্রে।
বেলজিয়ামে ১২ বছরের কিশোরীর মৃত্যুর কারণও কোভিড-১৯ সংক্রমণ বলে নিশ্চিত করেছে বেলজিয়ামের স্বাস্থ্য দপ্তর। তাহলে কি করোনার সংক্রমণ এবার কোপ বসাচ্ছে কমবয়সীদের শরীরেও? এখনও সঠিক জবাব দিতে পারেননি ভাইরোলজিস্টরা।
বিশেষজ্ঞরা আগে বলেছিলেন, কমবয়সীদের মধ্যে এই মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি কম। তাই বলে স্বস্তির ব্যাপার নেই কারণ মারণ ভাইরাস যেভাবে জিনের গঠন বদলাচ্ছে তাতে তার আক্রমণ করার ধরনও পাল্টাচ্ছে। মানুষের শরীরে বিশেষ বাহক বা রিসেপটর জিন খুঁজে নিয়ে এরা দেহকোষে ঢুকে পড়ছে। মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙেচুরে নিজেদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা খুঁজে নিচ্ছে। কাজেই কোভিড-১৯ সংক্রমণের শিকার শুধু বয়স্করাই হতে পারে, এই ধারণা বদ্ধমূল করে রাখা ভুল হবে। সূত্র- ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউকে।