খুলনায় দুজনের মৃত্যু নিয়ে উৎকণ্ঠা

জ্বর, গলাব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে খুলনায় গত বৃহস্পতিবার দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন সম্প্রতি ভারত থেকে দেশে ফিরেছিলেন। এক রোগীর স্বজনেরা বলছেন, উপসর্গ শুনেই চিকিৎসকেরা ভয় পেয়ে রোগীর কাছে আসেননি।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটির পরিচালক এ টি এম মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, মৃত ওই দুজনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ ছিল। তাঁদের মধ্যে একজন ভারত থেকে এসেছেন। কিন্তু করোনা পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তাঁদের করোনা হয়েছিল কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ঢাকার বাইরে কোথাও করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। এ কারণে চিকিৎসকেরাও আতঙ্কে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বেলা একটায় জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে খুলনা মেডিকেলে আসেন বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার এক ব্যক্তি (৪০)। ওই ব্যক্তির স্বজনেরা টিকিট কেটে তাঁকে প্রথমে জরুরি বিভাগে দেখান।

উপসর্গ শুনেই ওই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সন্দেহে সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে বহির্বিভাগের মেডিসিন ইউনিটে যেতে টিকিটে লিখে দেন। অসুস্থ ওই ব্যক্তিকে কোনো রকমে ধরাধরি করে বহির্বিভাগে নেওয়ার পর কোনো চিকিৎসকই তাঁর কাছে যাচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে সেখান থেকে তাঁকে আবার জরুরি বিভাগে পাঠানো হয়। পরে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসার সময় বেলা পৌনে দুইটার দিকে মারা যান তিনি।

ওই রোগীর সঙ্গে ছিলেন তাঁর বড় বোন। তিনি অভিযোগ করেন, পাঁচ দিন ধরে জ্বর ও সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন তাঁর ভাই। স্থানীয় চিকিৎসকেরা ওষুধ দিলেও তিনি ভালো হচ্ছিলেন না। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে খুলনা মেডিকেলে আনা হয়। কিন্তু কোনো কিছু পরীক্ষা না করেই চিকিৎসকেরা মনে করেছেন তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এ কারণে একবার জরুরি বিভাগ থেকে বহির্বিভাগ তারপর আবার জরুরি বিভাগে পাঠানো হলেও তাঁকে কোনো চিকিৎসক দেখেননি।

মারা যাওয়ার পর ওই ব্যক্তির মরদেহ জরুরি বিভাগে এনে রাখা হয়। এ সময় মৃতদেহকে ঘিরে স্বজনদের আহাজারি ও উৎসুক সাধারণ মানুষের ভিড় তৈরি হয়।

একই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে নড়াইল থেকে আরেক ব্যক্তিকে খুলনা মেডিকেলে আনার পর চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ওই ব্যক্তি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভারতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এক সপ্তাহ আগে ভারত থেকে বাড়িতে ফেরেন।

এরপরই জ্বর, গলাব্যথা, কাশিতে আক্রান্ত হন তিনি। স্থানীয়ভাবে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার খুলনায় আনার পথেই তিনি মারা যান।

ওই দুই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সন্দেহ করে তাঁদের স্বজনদের কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

সূত্র-প্রথম আলো

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)