খাজরার ১৩ টি পরিবার ১৬ বছর বিদ্যুৎ বঞ্চিত
আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নে বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ১৩টি পরিবারের সদস্যরা ১৫/১৬ বছর যাবৎ বিদ্যুৎ সংযোগ না পেয়ে চরম বিপাকে রয়েছে। যথারীতি আবেদন করার পর অজ্ঞাত কারণে তাদেরকে সংযোগ দেওয়া হচ্ছেনা।
১৯৭১ সালে জীবনের মায়া ত্যাগ করে দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া বীরমুক্তিযোদ্ধা দীনেশ চন্দ্র মন্ডল পরাধীনতার কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে যুদ্ধে অংশ নিয়ে বিজয় মাল্য পরলেও বিদ্যুৎ পাওয়ার যুদ্ধে অজ্ঞাত কারণে পরাজয়ের শিকার করে অসুস্থ স্ত্রী ও অন্যদের নিয়ে চরম অপমান ও কষ্টকর পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছেন। সরকার প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ সহজ ও দ্রুততর সময়ে সম্পাদনের কাজ করে যাচ্ছেন।
কিন্তু সেই কাজকে বাস্তবায়নে খাজরার কিছু পরিবারকে অবহেলার চোখে দেখা হচ্ছে বলে সকলের ধারনা। খাজরার দুর্গাপুর গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা দীনেশ চন্দ্র মন্ডল, শিবপ্রসাদ মন্ডল, শংকর ঢালী, অরবিন্দ ঢালী, বিকাশ ঢালী, প্রসাদ ঢালী, ভবেন্দ্র মন্ডল, যমুনা রানী, নলিনী মন্ডল, তরুন মন্ডল, পঞ্চরাম মন্ডল, শিবপদ ঢালী, আঃ হান্নান মোড়ল একই মহল্লায় বসবাস করেন। তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন চলে গেছে। ১৫/১৬ বছর আগে তারা বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে বিদ্যুৎ বিভাগে পাটকেলঘাটা অফিসে যোগাযোগ করেন।
কিন্তু তাদেরকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার লক্ষণ না দেখে তারা বারবার যোগাযোগ করতে থাকনে। কিন্তু কোন বিদ্যুৎ বিভাগের কোন তৎপরতা তারা দেখতে পাননি। বাধ্য হয়ে ৩ বছর আগে তারা অন লাইন আবেদন করেন। এরপর সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক এমপি সাহেবকে দিয়ে ফোন করিয়ে নেন। এক বছর আগে তাদের এলাকায় গিয়ে বিদ্যুৎ কর্তারা মাপজোক করেন।
বলেন দ্রুত সময়ে সংযোগ দেওয়া হবে কিন্তু না দেওয়া হয়নি। মুক্তিযোদ্ধার বাড়ির সীমানা থেকে মাত্র ৩ গজ দূরে কোমল চন্দ্র মন্ডলের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে, বাড়ির সীমানায় সুনীল চন্দ্র চক্রবর্তী ও দুখে রাম ঢালীর বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগা মুক্তিযোদ্ধা দীনেশ ও তাদের পাশের ১৩টি পরিবার বরাবারই বঞ্চিত ও অবহেলিত রয়ে গেলেন।
তাদের প্রশ্ন, একটি মহল্লাহর ১৩ টি মানুষ কি অপরাধে দোষী যে, তাদেরকে দিনের পর দিন বিদ্যুৎ বঞ্চিত রাখা হবে? মুক্তিযোদ্ধা দীনেশ মন্ডল বলেন, তার স্ত্রী হার্টের রোগি, গরমে অসহায় হয়ে পড়ে। এছাড়া বর্তমান যুগে বিদ্যুৎ ছাড়া লেখাপড়াসহ যাবতীয় কাজকাম সত্যি অসম্ভব হয়ে পড়েছে। পাটকেলঘাটা বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে কথা বলেছি, কিন্তু তাদের কথায় অনুমান করা যায়, কিছু উৎকোচের প্রয়োজন রয়েছে। তিনি এ পরিস্থিতি থেকে দ্রুত নিস্কৃতি চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।