পাটকেলঘাটার কুমিরা স্বরস্বতীঘাটে মন্দিরজুড়ে ইটেরভাটা, বাধাগ্রস্থ হচ্ছে পূজা অর্চনা

পাটকেলঘাটার কুমিরা স্বরস্বতীঘাটে মন্দির জুড়ে ইটের ভাটা হওয়ায় সনাতন ধর্মালম্বীদের পূজা অর্চনা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। বিভিন্ন পূজা পার্বন পালন করতে অনেকটা দ্বিধান্বিত বোধ করতে হয় স্থানীয়দের। এমএন ব্রিকসের বর্তমান ভাটা মালিক খায়রুল ইসলাম মণু সুকৌশলে মালিক বনে যাওয়ায় তার ক্ষমতার কাছে কেউই অভিযোগের সাহসই পাই না।
জানা যায়, এম এন ব্রিকসের পূর্বের মালিক ছিলেন মাষ্টার দুলাল চন্দ্র। তারই ভাটায় টলি চালিয়ে সামান্য পয়সায় সংসার চালাতেন বর্তমান ভাটা মালিক খায়রুল ইসলাম মনু। দুলাল চন্দ্র ব্যস্ত থাকার সুবাদে সুযোগ বুঝে একেবারে সুকৌশলে দেনা দেখিয়ে মাত্র ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে নিজের আয়ত্বে নেন খায়রুল ইসলাম মনু। অঢেল সম্পত্তি তৈরীর পেছনে আরও রয়েছে অজানা রহস্য। রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া এই মনু স্থানীয় জমির মালিকদের নিকট থেকে একেবারেই কম মুল্যে জমি ইজারা নিয়ে সেখানে গড়ে তুলেছেন বিশাল আয়তনের ইটভাটা। পাশাপাশি ৩ ফসলি জমি ইজারা নিয়ে ইট তৈরীর জন্য সেখানে গভীর করে মাটি উঠিয়ে বিঘার পর বিঘা জমি খানা খন্দে পরিণত করে রেখেছেন। এছাড়া একেবারে কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী হওয়ায় বছরের পর বছর নদ হতে মাটি কেটে ইট বানালেও অদৃশ্য কারণে কেউই তার বিষয়ে মুখ খুলতে সাহস করেনা। ভাটার চর্তুপাশে ৩ ফসলি জমি ধান, পাট, সহ ফলজ বনজ বৃক্ষ হওয়ায় ভাটা পোড়ার পাশাপাশি ধুকে ধুকে মরছে সকল গাছপালা।

অভিযোগ আছে হিন্দু সম্প্রদায় হওয়ায় কেউ ফসলি জমি ইজারা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার উপর রাতের আধারে নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। ফলে ভয়ে কেউই তার বিষয়ে মুখ খুলতে চায় না। আবার জমি ইজারা নিলেও সময়মতো হারির টাকা না দিয়ে নানান টালবাহানা শুরু করে। পাটকেলঘাটা টু তালা সড়কের দু’ধারে মাটি বালু রেখে দেয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। টলি, স্কেভেটর রেখে কাজ চলমান রাখায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী সাধারণের। সরেজমিনে দেখা যায়, ভাটার চিমনির উপর মণ মণ কাঠ রেখে পোড়াতে। জ্বালানো হয় কিনা প্রশ্নে রহিমা নামের এক কর্মচারী রান্নার কাঠ বলে জানান। দেখা মেলে কয়লা ওড়ানোর দৃশ্য। পরিবেশ বিধ্ব্ংসী কয়লা উড়িয়ে এলাকার পরিবেশ ভারি করতে।

ইট কিনতে আসা কুমিরা গ্রামের রহিম নামে একজন জানান, ইট বিক্রির সময় কয়েকজন দালাল পুষে রাখায় ৩ নং ইটকে ১ নং ইট বলে চালিয়ে দেন বেশিরভাগই। তবে এতো অভিযোগের পরও কিভাবে তার ভাটা চলমান রয়েছে এমন প্রশ্নে আকবার আলী নামে স্থানীয় এক বৃদ্ধ বলেন, কতিপয় ব্যক্তিকে মাসোয়ারা দিয়েই ভাটা চালিয়ে যান তিনি। ফলোশ্রুতিতে অবৈধ পথে টাকা কামিয়ে জিরো থেকে হিরো বনে গেছেন কোটিপতি এই খায়রুল ইসলাম মণূ। মাঝে মধ্যে প্রশাসন হানা দিলে আগাম সংবাদ পেয়ে সবই গুটিয়ে সাধু বনে যান তিনি। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের ভাই পরিচয় দিয়ে তিনি অদৃশ্য খুটির জোরে ধরাকে সরা জ্ঞান করেই চলেছেন এই মনু। এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে নিজেকে ব্যস্থতা দেখিয়ে কেটে পড়েন। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভাটা বন্ধের জন্য উপজেলা ও জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)