পরিবর্তন আসছে ‘মুজিববর্ষ’ খেলাধুলার পরিকল্পনায়

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপনে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে খেলাধুলার প্রায় একশটি আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছিল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। এ জন্য ৩০৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার বাজেটও তৈরি করা হয়েছিল।

শুরুতে ধরে নেয়া হয়েছিল সরকার পুরো টাকা দিয়ে খেলাধুলার কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করবে। সেটা হচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে স্পন্সর সংগ্রহ করে কর্মসূচি বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাই যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে পরিবর্তন আনতে হচ্ছে খেলাধুলার পরিকল্পনায়।

মুজিববর্ষে কী কী করতে চান, পরিকল্পনা করুন, বাজেট দিন- যুব ও ক্রীড়া প্রতমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি’র এ আহ্বানে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন ক্রীড়া ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোর কর্মকর্তারা। এটা করবো, ওটা করবো বলে নানা পরিকল্পনা জমা দিয়েছিলেন তারা। এমন কি বাংলাদেশ গেমসের পাশপাশি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ করার পরিকল্পনা সাজিয়ে বসেছিলেন অনেক ফেডারেশনের কর্মকর্তারা।

কিন্তু এখানে মন্ত্রণালয় লাগামটা টেনে ধরছে। সেটা সরকারের নির্দেশনা অনুসারেই। এ বিষয়ে যুব ও ক্রীড়া প্রদিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি জানিয়েছেন, ‘সরকার থেকে ইতোমধ্যে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, মুজিববর্ষের আয়োজনগুলোর জন্য স্পন্সর সংগ্রহ করে করতে হবে। সপ্তাহখানেক আগে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের এমন একটি নির্দেশনা আমরা পেয়েছি। এরপর আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি যাতে তিনি স্পন্সরের বিষয়ে সহযোগিতা করেন। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টি দেখতে দায়িত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে।’

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘অর্থমন্ত্রী তো বাংলাদেশ গেমসের টাকা দিতেও চাইছিলেন না। পরে তাকে বোঝানো হয়েছে। টাকা ছাড় দিয়েছেন। আগামী ১ থেকে ১০ এপ্রিল ৩১টি ডিসিপ্লন নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ গেমস। এর বাইরেও ২২টি খেলা আছে যাদের বাংলাদেশ গেমসে খেলার সুযোগ হচ্ছে না। যে কারণে, ঘরোয়া আয়োজনগুলোর পরিকল্পনায় আমরা পরিবর্তন আনছি।’

সেটা কিভাবে? ‘যে ৩১ খেলা আছে বাংলাদেশ গেমসে তাদের এ বছর আর জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ করার দরকার নেই। তাহলে একই খেলার পুনরাবৃত্তি হবে। সম্ভব হলে ২০২১ সালে এই ৩১ ডিসিপ্লিনের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করা যাবে। কারণ, ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত চলবে ‘মুজিববর্ষ’ পালন। নতুন অর্থ বছর সামনেই। তাই আগামী অর্থ বছরেই হবে বেশি খেলাধুলা। সে জন্য বিশেষ থোকবরাদ্দ আমরা নিতে পারবো। যেসব খেলা বাংলাদেশ গেমসে নেই তাদের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ হবে ২০২০ সালে। এই খেলাগুলোর জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ করতে আমরা অতীতের মতো যতটুকু পারি সহযোগিতা করবো’- বলেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।

তাহলে কি আগে যে কর্মসূচি করা হয়েছিল সেখান থেকে কিছু বাদ পড়বে? ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা ঘরোয়া কোনো কর্মসূচি বাদ দিচ্ছি না। বেশকিছু আয়োজন এবারের পরিবর্তে আগামী বছর হবে। তাছাড়া সরকার বলেছে, স্পন্সরের ব্যবস্থা করে আয়োজন করতে। আমরা সেভাবে করার জন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং বঙ্গবন্ধু কল্যাণ ট্রাস্টের কাছে আমরা চিঠি দেবো যাতে তারা স্পসর সংগ্রহে আমাদের সহযোগিতা করেন। আশা করি, অর্থেও কোনো সমস্যা হবে না।’

ঘরোয়া কমূর্সচি বাদ না দিলেও আন্তর্জাতিক আয়োজনে ব্যঘাত ঘটতে পারে আশঙ্কা করেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। কারণ, করোনাভাইরাস। অনেক দেশেই এখন এই রোগের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

‘এটা নিয়ে আসলে কিছু করার নেই। আমরা যাদের আমন্ত্রণ জানাবো তাদের অনেকে হয়তো আসতেই চাইলো না। নানা ধরনের বিষয় থাকবে। এমনও হতে পারে আমরা কোনো আয়োজন ৮ দেশ নিয়ে করার পরিকল্পনা করেছিলাম সেখানে দল হলো ৫-৬ টি। এমন হতেও পারে। এখন তো অনেক কিছুই করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমরাও তো আরচারি, ভলিবল, বাস্কেটবল ও সাইক্লিং ইতোমধ্যে স্থগিত করে দিয়েছি’- বলেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।

বাংলাদেশ গেমসে আছে যেসব ডিসিপ্লিন
আরচারি, অ্যাথলেটিকস, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল, শরীর গঠন, বক্সিং, দাবা, ক্রিকেট, সাইক্লিং, ফেন্সিং, ফুটবল, গলফ, জিমন্যাস্টিকস, হ্যান্ডবল, হকি, জুডো, কাবাডি, কারাতে, খো খো, রোইং, রাগবি, রোলার স্কেটিং, সুইমিং, শ্যুটিং, টেবিল টেনিস, টেনিস, তায়কোয়ানদো, ভলিবল, ভারোত্তোলন, রেসলিং ও উশু।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)