মানুষের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন ফাদার রিগান মেয়র আব্দুল খালেক তালুকদার
জীবন-যৌবনের শ্রেষ্ঠ সময়ে ফাদার রিগন এদেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। ফাদার রিগনকে বাদ দিয়ে মোংলার কোন শিক্ষা উন্নয়নের চিন্তা করা যায়না। আমরা তাঁকে আর ফিড়ে পাবো না, তবে তিনি যা রেখে গেছেন তা আমাদের ধরে রাখতে হবে। অল্প বয়সে তিনি ধর্ম প্রচারের জন্য এসে এদেশকে ভালোবেসেছেন। মুক্তিযুদ্ধ এবং নারী শিক্ষা প্রসারে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
মেলার মাধ্যমে এদেশে ফাদার রিগনকে আজীবন বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আজ ২৫ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে মোংলার হলদিবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চত্বরে ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের আয়োজনে তিনদিন ব্যাপী ফাদার রিগন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এ কথা বলেন।
ফাদার মারিনো রিগনের ৯৫ তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী রিগন মেলার উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’র সভাপতি সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, সহকারি কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার রাজবংশী, থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সুনীল কুমার বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম হোসেন।
এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে চিলা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন, চাদঁপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা মোঃ তারিকুল ইসলাম, সুন্দরবন ইউপি চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন, পৌর যুবলীগের সভাপতি এস এম কবির, সাধারন সম্পাদক শেখ আল-মামুন, পৌর কাউন্সিলর জাহানারা চানু, পৌর আওয়ামীলীগের নেত্রী সরবরীয়া খানম দড়িয়া, পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক কাজী গোলাম হোসেন বাবলু, তরফদার মোত্তালিব মুক্ত, মোঃ আবু হানিফ, ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব বিবেকানন্দ মজুমদার, চিলা উইনয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মিহির ভান্ডার, সাধারন সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এ রিগন মেলায় কবি গান, জারীগান, যাত্রাপালাসহ বিভিন্ন লোকসঙ্গিত গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। উল্ল্যেখ্য ১৯২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ইতালির ভিল্লাভের্লা গ্রামের এক সংস্কৃতিমনা পরিবারে ফাদার মারিনো রিগন জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৫৩ সালে রাজকীয় দায়িত্ব পালন করতে ইটালি থেকে বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে মোংলায় স্থায়ী আবাস গড়ে তোলেন ফাদার রিগন।
১৯৭১ সালে গোপালগঞ্জ এলাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেন। তিনি একজন অনুবাদক। রবীন্দ্র-লালন-জসিম উদ্দিনের বই ইটালি ভাষায় অনুবাদ করেছেন। তিনি একজন সাহিত্যিক-শিক্ষানুরাগী। তাঁকে মুক্তিযোদ্ধা বলা হয়। ২০০৮ সালে আওয়ামীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ফাদার রিগনকে নাগরিকত্ব প্রদান করেন। মোংলায় ফাদার রিগন ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ লাইব্রেরী-হাসপাতাল-গীর্জাসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তিনি অসুস্থতার কারনে নিজ জন্মস্থান ইটালিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবার মৃত্যু বরন করেন। মূলত ৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্মদিন। তাঁর জন্মদিন কে ধরে রাখতে ২০০৯ সাল থেকে প্রতিবছর রিগন মেলার আয়োজন করেন ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন।######## ছবি সংযুক্ত আছে। ##