জিম্বাবুয়েকে অল্পেই গুটিয়ে দিলো বাংলাদেশ
সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে মাঠে নেমেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রানে গুটিয়ে গেছে জিম্বাবুয়ে। নাঈম হাসান ও রাহীর বোলিং তোপে দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেই গুটিয়ে যায় তারা। টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে এদিন খুব বেশি রান যোগ করতে পারেনি সফরকারী দলটি।
চার উইকেট হাতে রেখে ২২৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে জিম্বাবুয়ে। স্কোরবোর্ডে ১২ রান যোগ হতেই দিনের প্রথম আঘাত হানেন আবু জায়েদ রাহী। তিরিপানোকে ৮ রানে ফেরানোর পর নিজের পরের ওভারেই অ্যান্সলে লভুকে ০ রানে ফেরান তিনি। এসময় রাহী ও নাঈমের দুজনের নামের পাশেই ছিল চারটি করে উইকেট। দুজনের মাঝে কে আগে ফাইফার পান তা নিয়েই বেশ কিছুক্ষণ প্রতিযোগিতা চলে।
তবে দুজনের কাউকেই ফাইফারের প্রতিযোগিতায় জয়ী হতে দেননি তাইজুল ইসলাম। বাকি থাকা ২ উইকেটই শিকার করেন তিনি। ব্যক্তিগত ৩০ রানে চাকাভা নাঈমের ক্যাচে পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে থেমে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস।
এর আগে প্রথম দিন টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় জিম্বাবুয়ে। দলটির হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করেন প্রিন্স মাসভাউরে ও কেভিন কাসুজা। ইনিংসের শুরুতেই তাদের চেপে ধরেন বাংলাদেশের বোলাররা। প্রথম ছয় ওভারে কোনো রানই নিতে পারেননি মাসভাউরে-কাসুজা। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে চার মেরে রানের খাতা খোলেন মাসভাউরে।
পরের ওভারেই ব্রেক থ্রু এনে দেন আবু জায়েদ রাহী। ২৪ বলে ২ রান করে স্লিপে নাঈম হাসানের তালুবন্দি হন কেভিন কাসুজা। তার বিদায়ের পর মাসভাউরের সঙ্গে দেখেশুনে খেলতে শুরু করেন অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন।
বাংলাদেশের বোলারদের আর কোনো সুযোগ না দিয়ে রক্ষণাত্মকভাবে খেলতে থাকেন তারা। প্রথম সেশনে ৩০ ওভার শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৮০ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় সফরকারীরা। ৪৫ রানে মাসভাউরে ও ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন।
বিরতি থেকে ফিরে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন মাসভাউরে ও আরভিন। ৪২.৩ ওভারে দলীয় শতক পূর্ণ করে জিম্বাবুয়ে। অর্ধশতক তুলে নেন মাসভাউরে।
ধীরে ধীরে জিম্বাবুয়ে যখন ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছিলো তখনই আঘাত হানেন অফ স্পিনার নাঈম হাসান। দলীয় ১১৮ রানের মাথায় ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠা মাসভাউরেকে ফিরতি ক্যাচে সাজঘরে ফেরান নাঈম। ১৫২ বলে ৬৪ রান করেন মাসভাউরে।
অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেইলরকেও বেশিক্ষণ দাঁড়াতে দেননি নাঈম। ১১ বলে ১০ রান করে নাঈমের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান টেইলর। এরপর সিকান্দার রাজাকে নিয়ে চা বিরতি পর্যন্ত পথটা উইকেট না হারিয়ে কাটিয়ে দেন আরভিন। দুজন অপরাজিত থাকেন যথাক্রমে ৭ ও ৬০ রানে।
চা বিরতির কিছু পরেই জিম্বাবুয়ে শিবিরে ফের আঘাত হানেন নাঈম। সিকান্দার রাজাকে ১৮ রানে লিটন দাসের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। তার জায়গায় নামা মারুমার উইকেটে টিকে থাকার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন রাহী। এ পেসারের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৭ রান করেন তিনি।
অপরপ্রান্তে ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মিছিলের মাঝে একপ্রান্ত আগলে রেখে ২১৩ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন আরভিন। তাকে থামিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন নাঈম। তবে এর আগে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেন তিনি। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকে সর্বোচ্চ ইনিংসটি খেলেছিলেন ডেভিড হনটন। ১৯৯১ সালে ভারতের বিপক্ষে ১২১ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
রেগিস চাকাভা ও ডোনাল্ড তিরিপানো বাকি সময়ে আর কোনো উইকেট হারাতে দেননি। দুজনের অপরাজিত ৯ ও ০ রানের ইনিংসে ভর করে দিন শেষ করে জিম্বাবুয়ে।