পৌরবাসী উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে: কলারোয়ার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মনিরুজ্জামান বুলবুল
সাতক্ষীরায় কলারোয়া পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বুলবুলের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানান পৌরসভার যাত্রা শুরু করেন ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০১১ সালে কাউন্সিলর হিসাবে। এর পরে তিনি দুই দুই বার তুলসীডাঙ্গা ২নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। পৌরসভার মেয়র আকতারুল ইসলামের নামে মামলা থাকায় তিনি বরখাস্ত হন। এর পর থেকে তিনি পৌরসভার সকল উন্নয়ন ক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এই পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত, আয়তন ১৫.৭ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ৩১ হাজার ৪শ’৩৬ জন। মোট ভোটার প্রায় ২০ হাজারের মতো। বর্তমানে পৌরসভাটি ‘খ’ শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে।
দায়িত্ব পালনের দেড় বছরে তিনি পৌর এলাকায় দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছেন। রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার, সড়কে বাতি স্থাপন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ অনেক কাজ হয়েছে। তারপরও রয়ে গেছে অনেক সমস্যা। ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য ডাম্পিং স্টেশন নেই। তিনি এ সমশ্য সমাধানের জন্য ৩বিঘা জমি লিজ নিয়েছেন। এই পৌরসভায় শিশুদের জন্য নেই বিনোদন পার্ক। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনারও কোনো ব্যবস্থা নেই। নেই পৌর অডিটোরিয়াম।
পৌর এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শেখ শহিদুল ইসলাম জানান, পৌর এলাকার রাস্তাঘাটের প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে। সড়কে পর্যাপ্ত বাতি স্থাপন করা হয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়ন, পাবলিক টয়লেটের স্থাপন ও সংস্কার হয়েছে। ১নং ওয়ার্ড তুলসীডাঙ্গা গ্রামের সমাজসেবক সৈয়দ আলী বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মেয়রের হাত ধরে পৌর এলাকায় দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে ঠিক। কিন্তু শিশুদের জন্য কোনো বিনোদনের পার্ক নেই পৌর এলাকায়। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্যও কোনো অডিটোরিয়াম নেই। এসব অভিযোগের জবাব ও নিজের সফলতার কথা জানাতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বুলবুল। তিনি বলেন, দায়িত্ব পালনের দেড় বছরে রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। পৌরসভাকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় এনেছি। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খুব দ্রুত পৌরবাসী বিশুদ্ধ পানি পবেন বলে আশা করছি। ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ হয়েছে এবং আরো উন্নয়নের কাজ চলছে।
ভারপ্রাপ্ত মেয়র আরো বলেন, উন্নয়নমূলক কাজে আমার আন্তরিকতার কমতি নেই। তবে দলীয় কোন্দলে আমি কোণঠাসা হয়ে আছি। কোনো উদ্দেশ্য ছাড়া ষড়যন্ত্রকারীরা আমার পেছনে লেগে আছে। তাদের ষড়যন্ত্রের কারণে কিছু কাজ করতে পারিনি। তারপরও থেমে নেই পৌরসভার উন্নয়ন কাজ। পৌরসভা ২য় তলায় উন্নত হয়েছে। মুজিবর্ষের দৃশ্যমান গেইট করেছি। মেয়র বলেন, গত ৩০ বছরে যা হয়নি তা দেড় বছরে করেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের যে রূপরেখা দিয়েছেন সে লক্ষ্যে কাজ করছি। দলমত নির্বিশেষে সবাই এখন উন্নয়নের সুফল ভোগ করছেন। কেউ বঞ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তার প্রায় শতভাগ পূরণ করেছি। এ কারণে আগামীতে পৌরবাসী আমাকেই নির্বাচিত করবে বলে আমার বিশ্বাস। পৌরসভায় ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, চেষ্টা করছি শতভাগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে পৌরসভাকে পরিচালিত করতে। অনিয়মের অভিযোগ পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখন পর্যন্ত কেউ আমার কাছে পৌরসভার অনিয়মের অভিযোগ করেনি।
এক প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত মেয়র বলেন, প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে এলাকাকে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজমুক্ত ও মাদক মুক্ত করার চেষ্টা করছি। মাদক বিক্রেতা এবং ইভটিজারদের প্রতিহত করতে জনসচেতনতা বাড়াতে সভা-সমাবেশও করেছি। পৌর এলাকায় এখন কোন সন্ত্রাস নেই বললেই চলে। শিক্ষার মানোন্নয়ন প্রসঙ্গে মনিরুজ্জামান বুলবুল বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছি। গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছি। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নেয়া পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে পৌরসভার তদারকি টিম রয়েছে। পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীরা হাসপাতালের বর্জ্য অপসারণে কাজ করছেন। ভারপ্রাপ্ত মেয়র বলেন, নিজেদের দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করে থাকি। সর্বোপরি পৌরসভার মানন্নোয়নে আমার এবং আমার কাউন্সিলরদের আন্তরিকতার কমতি নেই। রাতদিন কাজ করে যাচ্ছি আমরা। তিনি বলেন, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। শুধু মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার জন্যই আমার ছুটে চলা। জনগণই আমার শক্তি।