সেরাতে নেই কেউ, অথচ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

ম্যাচের আগেরদিন আইসিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ওপেনার প্রান্তিক নওরোজ নাবিল বলছিলেন, ‘আমাদের দলের বিশেষত্ব হলো, কেউই হিরো হওয়ার জন্য খেলছে না। সবাইকে তার নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেয়া আছে, সবাই সেটি পূরণ করছে। আমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক অনেক ভালো। যা মাঠেও কাজে লাগছে।’

নাবিলের এ কথার প্রমাণ পুরো আসরজুড়েই দিয়েছে টাইগার যুবারা। এমন নয় যে কোনো একজন নির্দিষ্ট খেলোয়াড় একাই বাজিমাত করেছেন পুরো টুর্নামেন্টে। পুরোপুরি দলীয় প্রচেষ্টায় আসরের প্রথম ম্যাচ থেকে শুরু করে ফাইনাল পর্যন্ত খেলে, প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে আকবর আলীর দল।

এমনকি ফাইনাল ম্যাচেও দেখা যায়নি কোনো একক নৈপুণ্য। বোলিংয়ে তানজিম হাসান সাকিব, শরীফুল ইসলাম ও অভিষেক দাস; পরে ব্যাটিং তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন এমন ও অধিনায়ক আকবর আলি মিলে শেষ করেছেন ম্যাচ। দেশকে এনে দিয়েছেন স্মরণকালের সেরা সাফল্য।

আর এ কারণেই টুর্নামেন্ট শেষে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক কিংবা সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি- কোনো তালিকারই ওপরের দিকে নেই বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড়ের নাম। দুই দিকেই আধিপত্য বিস্তার করছে রানারআপ দল ভারতের খেলোয়াড়রা।

ব্যাটিংয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করেছেন ভারতের বাঁহাতি ওপেনার যশস্বি জাসওয়াল। ছয় ম্যাচে ৪ ফিফটি ও ১ সেঞ্চুরিতে ১৩৩.৩৩ গড়ে ঠিক ৪০০ রান করেছেন তিনি, জিতেছেন টুর্নামেন্টসেরার পুরস্কার। আর বোলিংয়ে সমানসংখ্যাক ম্যাচে ৩ বার চার উইকেটসহ মোট ১৭ উইকেট শিকার করেছেন ভারতেরই রবি বিষ্ণু।

বাংলাদেশের পক্ষে টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান করেছেন মাহমুদুল হাসান জয়। ছয় ম্যাচে ৪৬.০০ গড়ে ১৮৪ রান করেছেন তিনি। নেই কোনো ফিফটি, হাঁকিয়েছেন একটি সেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় জয়ের অবস্থান ১৫ নম্বরে।

সে তুলনায় বোলিংয়ে বেশ ওপরের দিকেই রয়েছেন বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান। ছয় ম্যাচে তার শিকার ১২টি উইকেট। একটি হ্যাটট্রিক, ম্যাচে একবার ৪ ও একবার ৫ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব রয়েছে তার। তালিকার ছয় নম্বরে অবস্থান রাকিবুলের।

এবারের যুব বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক

১. যশস্বি জাসওয়াল (ভারত) – ৬ ম্যাচে ৪০০ রান, সর্বোচ্চ ১০৫*
২. রাবিন্দু রাসান্থা (শ্রীলঙ্কা) – ৬ ম্যাচে ২৮৬ রান, সর্বোচ্চ ১০২*
৩. ব্রাইস পারসনস (দক্ষিণ আফ্রিকা) – ৬ ম্যাচে ২৬৫ রান, সর্বোচ্চ ১২১
৪. তাদিওয়ানশে মারুমানি (জিম্বাবুয়ে) – ৬ ম্যাচে ২৫৭ রান, সর্বোচ্চ ৯০
৫. ড্যান মুসলি (ইংল্যান্ড) – ৬ ম্যাচে ২৪১ রান, সর্বোচ্চ ১১১

এবারের যুব বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি

১. রবি বিষ্ণু (ভারত) – ৬ ম্যাচে ১৭ উইকেট, সেরা বোলিং ৫ রানে ৪ উইকেট
২. শফিকউল্লাহ গাফারি (আফগানিস্তান) – ৫ ম্যাচে ১৬ উইকেট, সেরা বোলিং ১৫ রানে ৬ উইকেট
৩. আখিল কুমার (কানাডা) – ৫ ম্যাচে ১৬ উইকেট, সেরা বোলিং ৪৬ রানে ৬ উইকেট
৪. তন্ময় সাঙ্ঘা (অস্ট্রেলিয়া) – ৬ ম্যাচে ১৫ উইকেট, সেরা বোলিং ১৪ রানে ৫ উইকেট
৫. দিলশান মাদুশাঙ্কা (শ্রীলঙ্কা) – ৬ ম্যাচে ১৩ উইকেট, সেরা বোলিং ৩৬ রানে ৫ উইকেট

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)