তিন দিনের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা’ ১৬ জানুয়ারি
প্রথমবারের মতো আগামী ১৬ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা’। মেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উদ্যোগে ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতের সরকারি– বেসরকারি অংশীজনদের নিয়ে এই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। আগামী ১৬ থেকে ১৮ জানুয়ারি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা’ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছরের এই মেলার মূল প্রতিপাদ্য, ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার প্রযুক্তির মহাসড়ক’।
ডিজিটাল প্রযুক্তির মহাসড়ক তৈরির অগ্রগতি, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা এবং পরিবর্তিত বিশ্বে নতুন সভ্যতার রূপান্তরে আইওটি, রোবটিক্স, বিগডাটা, ব্লকচেইন প্রযুক্তির মহাসড়ক ফাইভ জি’র বিস্ময়কর প্রভাব প্রদর্শনে দেশে এই প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে তিন দিনের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা’।
মেলায় প্রযুক্তির বিস্ময়কর সংস্করণ ফাইভ জি প্রদর্শন করা হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন, উপযোগী মানব সম্পাদ সৃষ্টি, ডিজিটাল প্রযুক্তির আধুনিক সংস্করণের সঙ্গে জনগণের সেতুবন্ধন তৈরি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নে অগ্রগতি তুলে ধরাই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা’র অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠায় ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সেতুবন্ধন স্থাপনের জন্য কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণ অপরিহার্য। ডিজিটাল সংযুক্তি হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরির অন্যতম ভিত্তি।
টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং জনগণের জন্য টেলিযোগাযোগ সেবাকে সহজলভ্য করার মাধ্যমে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ এর দিকনির্দেশনায় সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথকে প্রশস্ত করেছে। ডিজিটাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ গত এগারো বছরে প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছরের পশ্চাৎপদতা অতিক্রম করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে শিল্পোন্নত দেশের সঙ্গে সমান্তরালে চলার সক্ষমতা অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়ায় পৃথিবী দেখছে রূপান্তরিত এক বাংলাদেশ।
ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতকে ঘিরে দেশে প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে ব্যবসা, বাড়ছে রফতানি আয়, সেবানির্ভর প্রতিষ্ঠান ও সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানের। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি গত ১১ বছরে বাংলা দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে ইংল্যান্ড, ভারত, মালদ্বীপ ও পাকিস্তানসহ বিশ্বের নানা দেশে দেশে উদ্ভাসিত হয়েছে- বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুকরণীয় হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলাদেশকে নেতৃত্বের জায়গায় প্রতিষ্ঠা করা।
মন্ত্রী বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন আরো বেগবান করার জন্য দেশের মেধাবী তরুণ সমাজকে উপযোগী করে তৈরি এবং এই বিষয়ে তাদের চেতনা জাগ্রত করতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এই মেলায় ৩৫ থেকে ৪০টি আইএসপি প্রতিষ্ঠান, প্যারেন্টাল কন্ট্রোল, ট্রিপল প্লে (এক ক্যাবলে ল্যান্ডফোনের লাইন, ইন্টারনেট ও ডিশ সংযোগ, মোবাইল অ্যাপস, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা ও প্রযুক্তি ইত্যাদি প্রদর্শন করবে। এছাড়াও ওয়ালটন, স্যামসাং, সিম্ফনির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উৎপাদিত পণ্য দেখাবে, দেশি সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো তাদের তৈরি সফটওয়্যার ও সেবা উপস্থাপন করবে। টেলিকম অপারেটরগুলো তাদের ভয়েস, ইন্টারনেট ও মূল্য সংযোজিত সেবা (ভ্যাস) প্রদর্শন করা হবে।
এছাড়া জেডটিই, হুয়াওয়ে, নকিয়া, এরিকসন ফাইভ জি ও তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে। দেখাবে লাইভ অনুষ্ঠানসহ এর ব্যবহার উপযোগিতা প্রদর্শন করবে। মেলায় শিশুদের প্রোগ্রামিং ও রোবটিক্স শিক্ষা, টেলিমেডিসিন ও টেলিকম বিভাগের প্রতিষ্ঠানসমূহের সেবা প্রদর্শিত হবে।
মেলায় জিজিটাল উদ্যোক্তা সম্মেলন, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ছাড়াও ১৩টি সেমিনারের মাধ্যমে সরকারের মন্ত্রী, দেশি ও বিদেশি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ বক্তারা বর্তমানের প্রযুক্তি ও আগামী দিনে প্রযুক্তির গন্তব্য নিয়ে কথা বলবেন। ট্যালেন্ট গ্যাপ, ডিজিটাল অর্থনীতি, ডিজিটাল গ্রোথ, স্মার্ট সিটি, এসডিজির অ্যাচিভমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হবে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় ১০০টি স্টল, মিনি প্যাভিলিয়ন ও প্যাভিলিয়ন থাকবে। এতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ডিজিটাল অগ্রগতি তুলে ধরা হবে। মেলায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পৃথক কর্নার থাকবে। সেই কর্নারে প্রযুক্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবনী তুলে ধরা হবে।