বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ রায় প্রকাশ হতে যাচ্ছে : পিলখানা হত্যা মামলা
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর বহুল আলোচিত পিলখানা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি আজ মঙ্গলবার অথবা আগামীকাল বুধবার প্রকাশ হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। রায়ের দৈর্ঘ্য এবং মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তদের সংখ্যার দিক থেকে এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ রায়।
জানা গেছে, প্রায় ৩০ হাজার পৃষ্ঠার এ রায় লেখা ও এর কপি প্রিন্টের কাজও শেষ। শুধুমাত্র বাকি আছে বিচারপতিদের স্বাক্ষর। তাদের স্বাক্ষর যুক্ত হলেই পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ হবে যেখানে ১৩৯ জনকে ফাঁসি, ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন ছাড়াও ২০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়; খালাস দেয়া হয় ৭৯ জনকে।
হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেন, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত একটি বৃহত্তর বেঞ্চ চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় আসামিদের আপিল ও ডেথরেফারেন্সের শুনানি করে রায় দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ওই রায় ঘোষণার পর থেকেই হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় লেখার কাজ শুরু করেন বিচারপতিরা। রায়টি লেখা শেষ হওয়ার পর এর কপিও প্রিন্ট হয়ে গেছে। তবে সোমবার পর্যন্ত বিচারপতিদের স্বাক্ষরের কাজ শেষ হয়নি। আজ অথবা আগামীকালের মধ্যে এ স্বাক্ষরের কাজ শেষ হলে রায়টি প্রকাশিত হবে। এ রায় প্রকাশের মধ্য দিয়ে ছয় বছর আগে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর নিম্ন আদালতের দেয়া রায় অনুমোদন প্রক্রিয়া চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হবে।
এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতি মো. শওকত হোসেন মূল রায় লিখেছেন। তিনি প্রায় সাড়ে ১১ হাজার পৃষ্ঠার রায় লিখে বেঞ্চের অপর দুই বিচারপতির কাছে পাঠান। এরপর বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী পৃথকভাবে তার অংশ লিখেন। তিনিও প্রায় ১৬ হাজার পৃষ্ঠা লিখেছেন। এ দুই বিচারপতির সম্মিলিত রায় হয়েছে ২৭ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা। এরপর সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার লিখেছেন প্রায় ১১শ’ পৃষ্ঠার ওপর। এই তিনজনের লেখা রায় একত্রিত করে তা চূড়ান্ত করার পর প্রকাশ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আসামির ফাঁসির আদেশ সংবলিত পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে।
নিয়ম অনুযায়ী হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায় প্রকাশের পর আপিল বিভাগে আপিল করতে পারবে উভয়পক্ষই। এরপর আপিলের বিচারের মধ্য দিয়ে বিচার প্রক্রিয়া চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হবে। যদিও এরপর রিভিউ আবেদন করার সুযোগ থাকবে। রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি হওয়ার পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
সূত্র: আমাদের সময়