দেবহাটার সাপমারা খাল দখলমুক্ত করতে দিনভর উচ্ছেদ অভিযান
দেবহাটার বহুল আলোচিত সাপমারা খাল খননের মুল প্রতিবন্ধকতা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দিনভর অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। সোমবার সকাল ১০ টা থেকে সারা দেশে একযোগে চলমান অভিযানের সাথে মিল রেখে দেবহাটার পারুলিয়াতে সাপমারা খাল পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম।
সকাল থেকে পারুলিয়া ব্রীজ সহ আশপাশের এলাকাজুড়ে পুলিশ মোতায়েন রেখে একযোগে বৃহদাকৃত্রির তিনটি এস্কেভেটর মেশিন (ভেকু মেশিন) দিয়ে সাপমারা খাল পাড় দখল করে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে প্রশাসন। দিনভর চলমান উচ্ছেদ অভিযানে প্রায় অর্ধ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়।
উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল খায়ের, উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান, সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপক (এসও) সাইদুর রহমান, সার্ভেয়ার আলহাজ্ব নুরুল্লাহ, দেবহাটা এসিল্যান্ড অফিসের সার্ভেয়ার সাইদুর রহমান সহ জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, যুগ যুগ ধরে প্রবহমান খালটির তলদেশে পলিমাটি ভরাট হয়ে চরা লের সৃষ্টি এবং স্থানীয় অবৈধ দখলদারদের দখল প্রবণতায় নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছিলো ইছামতি নদীর সাথে সংযুক্ত এক সময়ের প্রানবন্ত সাপমারা খালটি।
ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছিলো। তাছাড়া খালের পানি প্রবাহের স্বাভাবিক ধারা মুখ থুবড়ে পড়ায় ডোবা নালার মতো জমাট বাধা হাটু পানিতে ময়লা আবর্জণা পচে তীব্র দুর্গন্ধে দুষিত হয়ে উঠেছিলো এলাকার পরিবেশ। সাম্প্রতিক সময়ে জণসাধারনের দাবী অনুযায়ী জলাবদ্ধতা নিরসন সহ উদ্ভুত সমস্যা সমাধান এবং পুনরায় সাপমারা খালটির নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে দেবহাটার ভাতশালা এলাকার ইছামতি নদীর সংযোগস্থল থেলে শুরু করে খালটির ১৯ কিলোমিটার বিস্তৃর্ন এলাকা নদী খনন পর্যায়ে খননের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে দুটি প্যাকেজে ১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। সরকারী বরাদ্দ অনুযায়ী টেন্ডারের মাধ্যমে চলতি অর্থ বছরের মাঝামাঝিতে খনন কার্যক্রম শুরু করে দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সার্বিক তত্বাবধানে বেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে খনন কাজটি।
কিন্তু চলমান খনন কাজে প্রতিবন্ধকতা হয়ে ওঠে খালপাড় দখল করে থাকা অবৈধ স্থাপনা। ফলে প্রতিবন্ধকতা দুরীকরণে সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযান চালিয়ে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন।