সেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ পদে আলোচনায় যারা
দীর্ঘ ৭ বছর পর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগে। ক্যাসিনোকাণ্ডে খড়গ নামায় সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওছার ও সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথকে এরইমধ্যে দলের সব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
আগামী ১৬ নভেম্বর শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বেচ্ছাসেবক লীগের তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যে নতুন মুখ আসবে এটি নিশ্চিত। নতুন কমিটিতে স্থান পেতে পদপ্রত্যাশীদের বিভিন্ন পর্যায়ে চলছে লবিং ও দৌড়ঝাঁপ। সর্বশেষ ২০১২ সালে সম্মেলন করা হয়েছিল।
সেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতাকালীন সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ একটি সুসংগঠিত সংগঠন। তাই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, ইমেজ নষ্ট, এমন কেউ নেতৃত্বে আসতে পারবে না। যারা নেতৃত্বে আসবে, তাদের অবশ্যই সৎ, অভিজ্ঞ এবং সাংগঠনিক হতে হবে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পদে আলোচনায় যারা-
নির্মল রঞ্জন গুহ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নং সহ-সভাপতি এবং আসন্ন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক। ছাত্রজীবন থেকে তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি করে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
মতিউর রহমান মতি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নং কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি। এক-এগারোর সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর আহবায়ক এর দায়িত্ব পালন করেছেন। ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা মতিউর রহমান মতি অবিভক্ত ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
আফজালুর রহমান বাবু, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি। তিনি স্কুলজীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
ছাত্রলীগের শামীম-পান্না কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পালন করেছেন।
নির্মল চ্যাটার্জি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
কাজী শহীদুল্লাহ লিটন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি। তিনি ১৯৯৫ সালে কোতোয়ালি থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ২০০১ সালে মহানগর সদস্য ছিলেন। ছাত্রজীবনে কোতোয়ালী থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
মজিবুর রহমান স্বপন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি। ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম আহবায়ক এর দায়িত্ব পালন করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আহ্বায়ক এবং মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
মতিউর রহমান মতি ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার আর্দশ অনুসারী, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, ত্যাগি, সৎ, নিষ্ঠাবান কর্মীবান্ধব এমন নেতারা নেতৃত্বে আসবে বলে আশা করি।
নির্মল রঞ্জন গুহ ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, দক্ষ-ত্যাগী ও পরীক্ষিতরাই সংগঠনের নেতৃত্বে ভালো হবে।
সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় যারা-
স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু। আসন্ন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্বে আছেন। ছাত্রজীবনে তিনি ক্যান্টনমেন্ট থানা ছাত্রলীগের দুই মেয়াদে সভাপতি, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই মেয়াদে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলিম। ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য এবং প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সম্মেলনকে ঘিরে তিনি বেশ তৎপর তিনি।
খায়রুল হাসান জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তিনি। জুয়েল এর আগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। এক-এগারোর সময় তাকে এক বছর কারাবরণ করতে হয়।
সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং এফ এইচ হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপু। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে জড়িত। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
সেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক সালেহ মোহাম্মদ টুটুল। দুই দুইবার তিনি দপ্তর দায়িত্ব পালন করেছেন।
গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, কর্মীবন্ধব, সৎ যোগ্য, ত্যাগি এবং দলের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে ভালো মনে করে দায়িত্ব দিবেন।
সম্পাদক আব্দুল আলিম ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, তারুণ্য নির্ভর, ত্যাগী ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাকেই নেতৃত্বে আনলে সংগঠনটি আরো শক্তিশালী হবে।
খায়রুল হাসান জুয়েল ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে যোগ্য মনে করবেন তাদেরকে এই সংগঠনের দায়িত্ব পালন করার সুযোগ করে দিবেন।
আবুল ফজল রাজু, বর্তমান সেচ্ছাসেবক লীগের পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগের কমিটির তিনি নির্বাহী সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাগী সদস্য ছিলেন।
গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারে যারা-
স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত পুরকায়স্থ। তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ক সম্পাদক। ৭৫ এর ঘাতক নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও গণমুক্তি আন্দোলন’ সংগঠনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ সেলিম এমপি সভাপতি থাকাকালীন অবস্থায় তিনি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা। স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম মাহবুবুল হাসান মাহবুব, কেন্দ্রীয় পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সারোয়ার মোর্শেদ আকন্দ জাস্টিস।