স্বপ্নের ম্যাচে দুঃস্বপ্নের হার
সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতে আনন্দে উদ্বেল হয়েছিল বাংলাদেশ। ভারত হয়েছিল স্তব্ধ। তাদের কাছে ‘দুর্বল’ বাংলাদেশ যে এমন কিছু করবে তা ছিলো কল্পনারও বাইরে। দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ জয়ের স্বপ্নে রাজকোটে নামে বাংলাদেশ, যা ভারতের জন্য ছিলো বাঁচা-মরার লড়াই। শেষ পর্যন্ত স্বপ্নভঙ্গ হলো টাইগারদের। রোহিতের অতিমানবীয় ব্যাটে ভর করে সহজ জয় পেয়েছে ভারত। ২৬ বল বাকি থাকতে ম্যাচ হারাটাও অনেকটা দুঃস্বপ্নের মতোই। ম্যাচটা টাইগাররা হেরেছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে।
বাংলাদেশের দেয়া ১৫৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন দুই ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান। মুস্তাফিজের চতুর্থ ওভার থেকে দুই চার ও এক ছক্কায় ১৫ রান আনেন রোহিত। ছয় ওভার না পেরোতেই দলীয় অর্ধশতকের দেখা পায় ভারত। দলীয় শতক পেরোয় কোনো উইকেট না হারিয়েই।
একাদশ ওভারে দলীয় ১১৮ রানে আসে প্রথম পতন। বিপ্লবের বলে ৩১ রানে বোল্ড হন ধাওয়ান। আরেকপাশে অতিমানবীয় ইনিংস খেলা রোহিতও টেকেননি বেশিক্ষণ। তবে ৮৫ রানে ফেরার আগে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর টর্নেডো বইয়ে দেন হিটম্যান। মোসাদ্দেকের এক ওভারেই তিন ছয় মারেন তিনি। রোহিতকেও ফিরিয়ে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করেন বিপ্লব। লোকেশ রাহুল ও শ্রেয়াশ আইয়ার বাকি সময় কোনো বিপর্যয় ছাড়াই কাটিয়ে দেন। দলকে এনে দেন ৮ উইকেটের বড় জয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভারতের গুজরাট রাজ্যের রাজকোটের সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে আসেন লিটন দাস ও নাঈম শেখ। প্রথম ম্যাচে শুরুটা ভালো না হলেও এ ম্যাচে দারুণ শুরু করে টাইগাররা। কোন উইকেট না হারিয়েই দলীয় অর্ধশত পার করে বাংলাদেশ।
ব্যাট হাতে বড় এক জীবন পান লিটন দাস। ম্যাচের ৬ষ্ঠ ওভারে চাহালের বলে ক্রিজের বাইরে এসে মারতে যান টাইগার ওপেনার। তবে ব্যাটে বলে করতে পারেননি। বল মিস করলে তা চলে চায় উইকেট রক্ষক পান্টের হাতে। করেন স্টাম্পিং। তবে ভাগ্য বিধাতা আজ লিটনকে সুযোগ দেন। আউট নিয়ে সন্দেহ হয় থার্ড আম্পায়ারের। তিনি দেখেন পান্ট উইকেটের আগেই বল ধরেন। এতে বেচে যান লিটন।
তবে বেশি দূর আগাতে পারেননি লিটন। সেই চাহালের বলেই পান্টের হাতে রান আউট হয়ে ঘরে ফেরেন লিটন। তার জায়গায় আসেন সৌম্য। ৩৬ রানের ইনিংস খেলে ঘরে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম।
দলের হাল ধরতে আসেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম। তবে গত ম্যাচে ভালো করলেও এ ম্যাচ জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। চাহালের বলে মাত্র ৪ রানে ক্যাচ তুলে দিয়ে ঘরের পথ ধরেন এ উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান। চাহালের বলেই ক্রিজের বাইরে এসে তুলে মারতে গিয়ে মিস করেন সৌম্য। লিটনের বেলায় ভুল করলেও সৌম্যের ক্ষেত্রে তা করেন নি পান্ট। স্টাম্পিং করে ফেরান ২০ বলে ৩০ রান করা এ ব্যাটসম্যানকে।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ছাড়া আর কেউই শেষ দিকে কিছু করতে পারেননি। ২১ বলে ৩০ রান করে চাহারের বলে শিভামের হাতে রিয়াদ ক্যাচ তুলে দিলে সেখানেই শেষ হয়ে যায় বড় স্কোরের স্বপ্ন। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ১৫৪ রানের লক্ষ্য পেরোতে তেমন বেগ পেতে হয়নি ভারতকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৫৩/৬ (২০ ওভার)
নাইম ৩৬, সৌম্য ৩০
চাহাল ২৮/২, চাহার ২৫/১
ভারত: ১৫৪/২ (১৫.৪ ওভার)
রোহিত ৮৫, ধাওয়ান ৩১
বিপ্লব ২৯/২
ম্যান অফ দা ম্যাচ: রোহিত শর্মা
সিরিজ: ১-১ ব্যবধানে ড্র