ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ বাতিল চাইলেন গম্ভীর
বাংলাদেশের ক্রিকেটে গত কয়েকদিনে কত ঘটনাই না ঘটে গেল। সব পেছনে ফেলে ভারতের মাটিতে পা রেখেছে টাইগাররা। দিল্লিতে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিকে সামনে রেখে দিল্লিতে বৃহস্পতিবার অনুশীলনও করেছেন মুশফিক, রিয়াদ, লিটন, সৌম্যরা।
তবে এই অনুশীলন আর দশটা অনুশীলনের মতো হয়নি। দিল্লিতে যে পরিবেশ দূষণ চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। আকাশ পুরো ঘোলা হয়ে আছে, বাতাসও ভারি, ঠিক যেন শীতের সকাল।
এমন পরিবেশে ঠিকভাবে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। এর মধ্যে লিটন দাসকে তো দেখা গেল মাস্ক পরেই ক্যাচিং অনুশীলন করতে। পরে ব্যাটিংয়ের সময় অবশ্য মাস্ক খুলে নেন তিনি।
তবে দিল্লির পরিবেশ যে ভালো নয়, বোঝাই যাচ্ছে। পরিবেশবিদরাও বলে যাচ্ছেন, এমন অবস্থায় এখানে ক্রিকেট খেলা ঝুঁকিপূর্ণ। খেলোয়াড়দের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
ভারতের সাবেক ওপেনার ও বর্তমান সংসদ সদস্য গৌতম গম্ভীর অবশ্য এসব খেলা-টেলা নিয়ে ভাবছেন না। তার মূল ভাবনা, দিল্লির পরিবেশ দূষণ নিয়ে। এখানে ম্যাচ হওয়ার চেয়ে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তিনি। অর্থাৎ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার প্রথম টি-টোয়েন্টি বাতিলের পক্ষেই ভারতের সাবেক এই ক্রিকেটার।
তিনি তাই বলেছেন, ‘দিল্লির পরিবেশ দুষণ মারাত্মক অবস্থা বিরাজ করছে। আমি মনে করি, ক্রিকেট বা অন্য কোনো ম্যাচ আয়োজনের চেয়ে দিল্লির পরিবেশ নিয়েই আমাদের বেশি ভাবা উচিত। এখানে বসবাসরত মানুষদের অবশ্য ক্রিকেট ম্যাচের চেয়ে পরিবেশ নিয়ে বেশি চিন্তা করা উচিত।’
সমস্যাটা শুধু বাংলাদেশের নয়, ভারতের ক্রিকেটারদেরও একই রকম কষ্ট হওয়ার কথা। যদিও ভারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিনায়ক রোহিত শর্মার কথায় তা মনে হচ্ছে না। নিয়তিম অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে বিশ্রাম দেওয়ায় টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতকে নেতৃত্ব দেবেন রোহিত। দলবল নিয়ে তারাও কাল পা রেখেছেন দিল্লিতে।
আর দিল্লিতে পা দিয়েই রোহিত জানিয়েছেন, পরিবেশ দুষণ নিয়ে তিনি ততটা চিন্তিত নন। বলেছেন ভারি কোয়াশায় ক্রিকেট খেলতে তাদের কোনো সমস্যা হবে না, ‘আমরা সবে এসেছি। পরিবেশ কেমন তা বোঝার মতো যথেষ্ট সময় পাইনি। তবে আমি যতদূর জানি, ৩ নভেম্বর এখানে ম্যাচ হবেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এখানে যখন টেস্ট খেলেছিলাম, কোনো সমস্যা হয়নি। এই মুহূর্তে ঠিক কী আলোচনা হচ্ছে, আমি জানি না। তবে শ্রীলঙ্কার ম্যাচের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, এখানে ক্রিকেট খেলতে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না।’
তবে রোহিতের চেয়েও গম্ভীরের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। কারণ গম্ভীর দিল্লিরই মানুষ। বর্তমানের এই ভয়ঙ্কর পরিবেশে ক্রিকেট খেলা কতটা কঠিন এবং ক্রিকেটারদের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, তা ভালো করেই জানেন তিনি। সেই জানা থেকেই তিনি চাইছেন, ৩ নভেম্বরের ম্যাচটা বাতিল হোক। তাতে ক্রিকেটারদের জন্যও ভালো হবে। ভালো হবে অন্যদেরও। প্রাপ্ত সময়টায় পরিবেশ দূষণ নিয়ে চিন্তা করা যাবে। দুষণ মোকাবিলায় কাজ করা যাবে।
তবে গম্ভীরের মনের আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে বলে মনে হয় না। বরং রোহিতের বিশ্বাস মতো, ৩ নভেম্বর ম্যাচ হবেই। কারণ, ম্যাচ বাতিলের কোনো রকম ইঙ্গিতই আয়োজকেরা দেয়নি। যার অর্থ, মাস্ক পরে হলেও লিটন, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহদের চালিয়ে যেতে হবে অনুশীলন। প্রস্তুত হতে হবে ভারতের বিপক্ষে ৩ নভেম্বরের টি-টোয়েন্টি যুদ্ধের।