ইরাকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ: কারফিউ ভেঙে রাজপথে গান-বাজনা
স্কয়ার জুড়ে শত শত গাড়ি। প্যা-পু-ভো-ভো করে বাজছে হর্ন। সেই সঙ্গে রাস্তায় রাস্তায় উচ্চ আওয়াজে গান। তার মধ্যে ভেসে আসছে নানা স্লোগান।
কারফিউ ভেঙে রাজপথে নেমেছে ছাত্রছাত্রীসহ হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। গাড়ির হর্ন আর গানের তালে তালে মাতিয়ে বিক্ষোভ করছে তারা। পবিত্র নগরী কারবালাতেও বিক্ষোভ চলছে। সোমবার রাতভর বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী।
এ ঘটনায় অন্তত ১৪ বিক্ষোভকারী নিহত ও অন্তত ৮৬৫ জন আহত হয়। তবে ইরাকি পুলিশের দাবি, তাদের হাতে কোনো বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়নি। খবর রয়টার্স ও এএফপির।
মার্কিন আগ্রাসনে বিধ্বস্ত ইরাক নিজেকে আস্তে আস্তে গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে লাগামহীন দুর্নীতি ও ভয়াবহ বেকার সমস্যা সমাধানের দাবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভ এখন সরকার পরিবর্তনের দাবিতে উত্তাল।
কিন্তু কঠোর অবস্থানে সরকার। শুরু থেকেই বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও প্রশাসন। পুলিশ-বিক্ষোভকারী সহিংসতায় এখন পর্যন্ত নিহত ২৪০। আহত ৮ হাজার।
সর্বশেষ সোমবার অন্তত ৫ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। এরপরই বাগদাদে অস্থায়ী কারফিউ জারি করে সেনাবাহিনী। নির্দেশনায় বলা হয়, মধ্যরাত থেকে রাজধানীতে গাড়ি-ঘোড়া এমনকি হেঁটে চলাচলও নিষিদ্ধ।
গ্রেফতারের হুমকি ও সহিংসতার আশঙ্কা সত্ত্বেও কারফিউ ভেঙেই রাস্তায় নামে বিক্ষোভকারীরা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই বাগদাদের ঐতিহাসিক তাহরির স্কয়ারে দলে দলে যোগ দেয় ছাত্রছাত্রীরা। কেউ হেঁটে আবার কেউ গাড়ি চড়ে।
শহরের স্রোতের মতো ঢুকতে থাকে টুকটুক বলে পরিচিত তিন চাকার গাড়িগুলো। সেই সঙ্গে প্যা-পু আওয়াজে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে তোলে। মূলত পুলিশের টিয়ারগ্যাস ও জলকামান ব্যবহার সত্ত্বেও পাঁচদিন ধরে তাহরির স্কয়ার দখলে রেখেছে বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারীদের ধরে রাখতে ও কিছু বিনোদনের জন্য রাস্তায় রাস্তায় বসানো হয়েছে সাউন্ড বক্স। রাজধানী ছাড়াও বিক্ষোভ চলছে ইরাকের শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণের কারবালা অঞ্চলেও। দিনরাত চলছে সভা-সমাবেশ-মিছিল। মাঝে মাঝে পুলিশের সঙ্গে চলছে সহিংসতা।
শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর হুশিয়ারি সত্ত্বেও বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে শত শত স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী।