হুইপ-এমপিসহ ৫০ নেতার ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে দুদক

হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এবং যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটসহ অর্ধশত নেতার ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে দুদক।

সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ক্যাসিনোকাণ্ডে অভিযুক্তদের লেনদেনের হিসাবের যাবতীয় তথ্য দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

যাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন- সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের এমপি শামসুল হক চৌধুরী, ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, যুবলীগ দক্ষিণের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, বিসিবি পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, অনলাইন ক্যাসিনোর মূলহোতা সেলিম প্রধান, যুবলীগ দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদ, কৃষক লীগের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজ, যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা জিকে শামীম, গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক প্রমুখ।

প্রসঙ্গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় চাঁদা দাবির অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে অপসারণের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি যুবলীগ নেতাদের বিষয়েও চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

এরপর গণমাধ্যমে যুবলীগ নেতাদের সংশ্লিষ্টতায় ঢাকার ৬০টি জায়গায় ক্যাসিনো পরিচালনার খবর প্রকাশ হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর ফকিরাপুলের ইয়াংমেনস, ওয়ান্ডারার্স এবং গুলিস্তানে মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদে অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম, বিপুল পরিমাণ মদ ও ৪০ লাখের বেশি টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব। ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে ওই দিনই যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়, যিনি ইয়াংমেনস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন।

পাশের ওয়ান্ডারার্স ক্লাব থেকেও জুয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ক্লাব পরিচালনার নেতৃত্বে ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওছার। এরপর ধানমণ্ডির কলাবাগান ক্রীড়াচক্রে অভিযান চালিয়েও ক্যাসিনো চালানোর প্রমাণ পায় র‌্যাব। অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয় ক্লাবের সভাপতি কৃষক লীগের সহ-সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজকে।

এর মধ্যে যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি করা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় মোহামেডান ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ ও বিসিবির পরিচালক লোকমান ভূঁইয়াকে।

পরে গ্রেফতার করা হয়েছে ক্যাসিনো সম্রাট যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর শুরুতে লোকজন নিয়ে কাকরাইলের কার্যালয়ে শোডাউন দিলেও পরে আড়ালে চলে যান সম্রাট। দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টায় ছিলেন তিনি। ৬ অক্টোবর ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামে স্টারলাইন পরিবহনের মুনীর হোসেন চৌধুরীর বাসা থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে আটক করে র‌্যাব।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)