সাতক্ষীরায় যত্র তত্র ব্যবহার হচ্ছে বিষাক্ত নাইট্রিক এসিড

সাতক্ষীরায় অবাধে যত্র তত্র ভাবে ব্যবহার হচ্ছে বিষাক্ত নাইট্রিক এসিড। যার বিষাক্ত ধোয়া জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ। এর পরিণতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। স্বর্ণের অলংকার তৈরীর কাজে দোকানীরা এই নাইট্রিক এসিড ব্যবহার করে। যা দোকানীসহ আশে পাশের জন সাধারণের মানব দেহের ক্ষতির কারণ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সাতক্ষীরা সদর বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের স্বর্ণের দোকান। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদরের খান মার্কেট, আলী মার্কেট, রাধানগর, পাকাপোল-নারিকেলতলা খাল পাড়সহ সদর উপজেলার পৌরসভা ও ইউনিয়নের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় বেআইনী ভাবে এই বিষাক্ত নাইট্রিক এসিড ব্যবহার করছে। এছাড়াও তালা, কলারোয়া, দেবহাটা, কালিগঞ্জ, আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন বাজারের গড়ে ওঠা ছোট বড় স্বর্ণের দোকানে ব্যবহৃত হচ্ছে এই বিষাক্ত নাইট্রিক এসিড।

নাইট্রিক এসিড মূলত একুয়া ফর্টিস এবং স্পিরিট অফ নাইটার নামে পরিচিত, একটি সক্রিয় খনিজ এসিড। যৌগটি বিশুদ্ধ অবস্থায় বর্ণহীন, পুরাতন এসিড হলুদাভ রঙ ধারণ করে কারণ এটা ভেঙে নাইট্রোজেনের অক্সাইড এবং পানি তৈরি করে। বাণিজ্যিক ভাবে উৎপন্ন নাইট্রিক এসিডের ঘনত্ব ৬৮%। যখন নাইট্রিক এসিডের ঘনত্ব ৮৬% এর বেশি হয় তখন একে “ধূমায়িত নাইট্রিক অ্যাসিড” বলে। নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের উপস্থিতির ভিত্তিতে ধূমায়িত নাইট্রিক এসিড সাদা এবং লাল দুই ভাগে ভাগ করা হয়। ৯৫% এর বেশি ঘনত্বের নাইট্রিক এসিড নাইট্রেশান বিক্রিয়ার প্রধান রিএজেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নাইট্রিক এসিড সাধারণত দৃঢ় জারণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

তবে এই এসিড ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তা মানছে না কেউই। এটি ব্যবহারের জন্য আলাদা কক্ষ ও চিমনি ব্যবহার করার বিধি থাকলেও অধিকাংশ দোকানে তা দেখা যায়নি। ফলে উন্মুক্ত অংশে নাইট্রিক এসিড ব্যবহারে তা জনসাধারণের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। অবাধে নাইট্রিক এসিড ব্যবহার হওয়ায় এই এসিডের বিষাক্ত ধোঁয়ায় সাধারণ মানুষ শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানিসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা জুয়েলার্স সমিতির সভাপতি গৌর দত্ত বলেন,অলংকার বানানোর জন্য আমরা নাইট্রিক এসিড ব্যবহার করে থাকি। এটা আমরা অতি সাবধানতার সহিত ব্যবহার করি, যাতে অন্যের ক্ষতি না হয়।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা : শেখ আবু শাহিন বলেন, নাইট্রিক এসিড একটি সক্রিয় খনিজ এসিড। এই এসিডের বিষাক্ত ধোঁয়ায় সাধারণ মানুষ শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানিসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সেজন্য উন্মুক্ত স্থানে না করে আলাদা কক্ষ বা চিমনির মধ্যে ব্যবহার করতে হবে।

এই সমস্ত স্বর্ণ কারিগরদের জন্য আবাসিক এলাকার বাহিরে তাদের কারখানা স্থাপনসহ এই নাইট্রিক এসিড ব্যবহারের উপর শর্তারোপ করার জন্য জেলা প্রশাসক ও নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে ভুক্তিভোগিরা ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)