নুসরাত হত্যায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায়ে প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদের আদালতে রায় ঘোষণা করেন। রায়কে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামি হলেন- মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।

এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও উভয় পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ৩০ সেপ্টেম্বর রায়ের জন্য আজকের এই দিন ধার্য করে দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ। মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ আসামির সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ।

প্রসঙ্গত, সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষা দিতে গেলে ঐ মাদ্রাসাকেন্দ্রের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় আসামিরা। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তার গায়ে এ আগুন দেওয়া হয়। কারাগারে আটক ঐ অধ্যক্ষের নির্দেশে মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থী কেরোসিন ঢেলে নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বেরিয়ে আসে। পরে দগ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিত্সাধীন থাকাকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। প্রতিবাদমুখর হয় মানুষ।

এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। তবে ঘটনার পরই হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালায় সোনাগাজী থানার তত্কালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। কিন্তু বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। পরে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় পিবিআইকে। এরপরই দ্রুততার সঙ্গে গ্রেফতার হতে থাকে আসামিরা। গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত শেষে গত ২৯ মে অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয় পুলিশ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)