বুয়েটে মাঠ পর্যায়ে আন্দোলন স্থগিত
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) আবরার হত্যায় ১০ দফার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন মাঠ পর্যায়ে স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বুয়েটের শহীদ মিনারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
এতে শিক্ষার্থীদের পক্ষে বুয়েটের ১৫তম ব্যাচের ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান সায়েম বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চার্জশিট দেয়ার পর বুয়েট প্রশাসন অপরাধীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার আগ পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করবে। বুয়েট প্রশাসনের কাছে যে পাঁচটি দাবি ছিল তা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। আর ১০ দফার মধ্যে ১, ৩ ও ৫ নাম্বার দাবি ছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের কাছে। তা বাস্তবায়ন হয়েছে বলে পুলিশ ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
সায়েম বলেন, আবরারের লাশকে কেন্দ্র করে অনেক স্বার্থান্বেষী মহল তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। তাই আগামীকাল গণশপথের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের আন্দোলন স্থগিত করা হবে। তবে আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করব। চার্জশিট দাখিলের পর অভিযুক্তদের স্থায়ী বহিষ্কারের আগে কোন একাডেমিক কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন না। পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের মাধ্যমে আন্দোলন চলবে।
এ বিষয়ে বুয়েট ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমরা তাদের দাবিগুলো মেনে নিয়েছি, সেক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট আন্তরিক। আমি রাজনীতিবিদ নই, তাই রাজনীতি বন্ধ করা আমার জন্য কঠিন কাজ। তারপরও তাদের দাবি মেনে আমি ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ করেছি। আমি গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি, তিনি আমাকে সহযোগিতার পূর্ণ আশ্বাস দিয়েছেন। আমরাও অন্তরিক, সরকারও আন্তরিক- সেটা শিক্ষার্থীরাও বুঝতে পেরেছে।
একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের সহায়তা করার আহ্বান জানিয়ে বুয়েট ভিসি বলেন, আমরা যে আন্তরিক শিক্ষার্থীরা সেটি বুঝতে পেরেছে, সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা যতদ্রুত সম্ভব এটি সমাধানের চেষ্টা করব। তাদের সমস্যাগুলো একে একে সমাধান করব। একদিনে তো অনেকদিনের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না। আমি বলছি যতবার প্রয়োজন তাদের সঙ্গে বসব। কারণ, আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে। আমি তাদের সহযোগিতা চাই।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে গত শনিবারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ক্যাম্পাসে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বুয়েট প্রশাসন।
গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। আবরার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বুয়েট ক্যাম্পাস। হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ ১০ দফা দাবিতে লাগাতার আন্দোলন শুরু করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।