কলারোয়ার খোরদো মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সম্মেলন

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার খোরদো মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদ, শচীন বিশ্বাসের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও চাঁদাবাজির মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার প্রতিবাদে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে খোরদো মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন, তিনি খোরদো মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ এর বর্তমান সভাপতি । চলতি বছরের ১৩ মে থেকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে দলুইপুরের ১৩৫.৪৫ একর বাওড়ে মাছ চাষ করার জন্য খাস কালেকশানের অনুমতি পান। সে অনুযায়ী তিনি ও সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শচীন চন্দ্র বিশ্বাস নিজ খরচে মাছ ছেড়ে , টোং বানিয়ে বাওড়ের মাছ চাষ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। অথচ ওই বাওড়ে যাতে তারা মাছ ধরতে না পারেন সেজন্য স্থানীয় খোরদো ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সেক্রেটারি পাকুড়িয়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে কলারোয়া উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দলুইপুর গ্রামের সেলিনা আনোয়ারুল ময়না, তার ছেলে জয়সহ একই গ্রামের রিপন, কুদ্দুসসহ একটি স্বার্থান্বেষী মহল চাঁদাদাবিসহ দীর্ঘদিন ধরে বাওড় দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ২০০৮ সালে খোরদো ইউপি’র চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুল ইসলাম, তার স্ত্রী সেলিনা আনোয়ারুল ময়না ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে বাওড়ের ৫০ লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট করা হয়। লুটপাটে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন নিত্যজিৎ সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, চক্রটি তার কাছে ও সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শচীন বিশ্বাসের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা না দিলে তাদের ঘের করতে দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারি দেয়। বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রতিকার চেয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর এক লিখিত অভিযোগ করেন। এ খবর জানতে পেরে উপরোক্ত সন্ত্রাসীরা ওইদিন রাত সাতটার দিকে শচীন বিশ্বাস তার বাড়ির সামনে মাসুমের চায়ের দোকানে বসে থাকাকালিন শচীন দাদার কাছে পূর্বের দাবিকৃত চাঁদার টাকা চায়। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আব্দুল মান্নান, জয়, রিপন, কুদ্দুছ, ময়না খাতুনসহ কয়েকজন লোহার রড নিয়ে শচীন বিশ্বাসকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে ডান পায়ের হাঁটুর মালাইচাকি ভেঙে দেয়। বর্তমানে শচীন বিশ্বাস সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় ১৬ সেপ্টেম্বর শচীন বিশ্বাসের মেয়ে বিপ্রতি বিশ্বাস বাদি হয়ে থানায় আব্দুল মান্নান, সেলিনাসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই দিন বিকেলে হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ সেলিনা ও নিত্যজিৎ সরকারকে গ্রেপ্তার করে। ১৮ সেপ্টেম্বর নিত্যজিৎ সরকার আসামীদের বাঁচাতে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ সস্মেলন করে। ওই দিন তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও প্রশাসনসহ সমিতির সদস্যদের অবহিত করে বাওড়ে কিছু মাছ ধরেন। ২৯ সেপ্টেম্বর জেল থেকে বের হয়ে রাতে কলারোয়া থানায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে উভয়পক্ষকে নিয়ে থানায় বসাবসি হয়। সেখানে তারা তাদের কাগজপত্রের মাধ্যমে বাওড়ে মাছ চাষ ও মাছ ধরার বৈধতা সম্পর্কে অবহিত করতে সমর্থ হন। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাগজপত্র বহির্ভুতদের বাওড়ে যাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করলে সেলিনা ও তার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে মঙ্গলবার দৈনিক পত্রদূত, কাফেলা ও সাতনদী পত্রিকায় আমি পুলিশ ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের নিয়ে বাওড়ের মাছ লুটপাট করেছি, নাশকতা ও মাদক মামলার আসামী, পুলিশ সমিতির সদস্যদের মধ্যে যারা মাছ লুটের প্রতিবাদ করেছে তাদেরকে ধরে নিয়ে ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে মর্মে অসত্য ও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করায়।

সংবাদ সম্মেনের মাধ্যমে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজরা যাতে সরকারিভাবে ইজারা নেওয়া মৎস্যজীবি সমিতির বাওড় দখল ও লুটপাট না করতে পারে তার বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ, শচীন বিশ্বাসের উপর হামলাকারিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের জন্য খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ও সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের উর্দ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষপ কামনা করা হয়। একইসাথে মঙ্গলবার স্থানীয় তিনটি পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)