আশাশুনির লক্ষ্মীখোলা সরঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও যাতয়াতের পথ পানিতে ভাসছে

আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের ১৪৭ নং লক্ষ্মীখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বর ও যাতয়াতের পথ হাটু পানিতে নিমজ্জিত থাকায় ক্লাশ বন্দের উপক্রম হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরাসহ এলাকার হাজার হাজার মানুষ স্কুল সংশ্লিষ্ঠ সবকয়টি পথ অর্থাৎ কেয়ারের রাস্তা সম্পূর্ণ ভাবে পানিতে তলিয়ে থাকায় পানির কবলে পড়ে চরম বিপত্তি রয়েছেন।

১৯৯১ সালে স্থাপিত বিদ্যালয়টির বিল্ডিং নির্মান করা হয় ২০০২ সালে। অফিস কক্ষসহ মোট ৪ কক্ষ বিশিষ্ট একতলা বিল্ডিং-এর অবস্থা নাজুক হয়ে পড়লে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য বরাদ্দ প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে কিছু সংস্কার কাজ করা হয়েছে। দেখতে কিছুটা ভাল লাগলেও ভবনের অবস্থা শোচনীয়ই রয়ে গেছে। শিক্ষকের সংখ্যা ৪, শূণ্য পদ রয়েছে ১টি। তার পরও শিক্ষকরা অতিকষ্টে স্কুল পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু ভবনের দুরাব্স্থার পাশাপাশি বর্ষকাল আসলেই বিদ্যালয়টি পনিতে ভাসতে শুরু করে। বছরের অধিকাংশ সময় স্কুল চত্বর পানিতে তলিয়ে থাকে।

স্কুলে যাতয়াতের পথ বা কেয়ারের রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত থাকায় শিক্ষকরা লুঙ্গি-গামছা পরে হাটু-কোমর পানিতে স্কুলে আসলেও শিক্ষার্থীরা পড়ে চরম বিপাকে। আষাঢ় মাস থেকে শুরু হয়ে আশি^স মাস পর্যন্ত ৪ মাস পানির ধকলে থাকতে হয় প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের। শিক্ষার্থীরা কখনো হাটু পানিতে বই হাতে বা বই মাথায় নিয়ে অভাবনীয় পরিস্থিতিতে স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করে। শিশু থেকে ২য় শ্রেণি ও ৩য় শ্রেণির অনেকেই স্কুলে আসতে পারেনা।

অভিভাকরাও তাদের ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠান বন্ধ করে দেয়। ফলে বছরের ৪টি মাস এ স্কুল বন্দের উপক্রম হয়ে পড়ে। গ্রামের অনেকে পানির সাথে যুদ্ধ করে এবং ২/১টি নৌকায় চড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে থাকেন। স্কুলের ২টি ল্যাট্রিনের ১টি পনিতে তলানো ও নষ্ট হয়ে গেছে। সুপেয় পানির ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। সবমিলে স্কুলটি সম্পূর্ণভাবে চালানোর পরিবেশ ধ্বংস হতে চলেছে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, এলাকার পরিবেশ অনুযায়ী এখানে সাইক্লোন শেল্টার কাম স্কুল বিল্ডিং নির্মান করা দরকার। স্কুল থেকে পুইজালা গাজীবাড়ি পর্যন্ত প্রায় দেৎ কিঃমিঃ. স্কুল থেকে পুইজালা যোজ্ঞেশ^র এর দোকান পর্যন্ত প্রায় ২ কিঃমিঃ এবং স্কুল হতে লক্ষ্মীখোলা উত্তর পাড়া পর্যন্ত প্রায় অর্ধ কিঃমিঃ পর্যন্ত কেয়ারের রাস্তাটি উচু করে নির্মান করে পাকা করনের ব্যবস্থা নিলে ভোগান্তি কমান সম্ভব হবে। ক্লাস্টার অফিসার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহাজাহান আলি জানান, স্কুলের সার্বিক অবস্থা খুবই শোচনীয়।

স্কুলের চিত্র তুলে ধরে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবী সুদুর পল্লীর ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য এই প্রতিষ্ঠান খুবই প্রয়োজনীয়। এখানে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ও অতি জরুরী ভাবে সাইক্লোন শেল্টার কাম স্কুল ভবন নির্মান এবং মাটি ভরাটের পাশাপাশি সড়কের উন্নয়ন খুবই প্রয়োজন। বিষয়টি সরকারি দপ্তর প্রধান ও জন প্রতিনিধিদের সুনজর দেওয়ার জন্য তারা বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)