ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফাইনালে বাংলাদেশ

‘ও ভাই’ ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ’ এর তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করল সাকিব বাহিনী। জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশী বোলারদের দাপটে পেরে উঠতে পারেনি জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে ১০ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রানে আটকে যায়। ফলে তাদের ৩৯ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ১৭৬ রান করতে সমর্থ হয় টাইগাররা।

শুরুতেই ব্যাট করতে আসেন বাংলাদেশ ওপেনার লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। লিটন দাসের ব্যাটে যেন আজ আগুন ঝড়েছে। কিন্তু হতাশ করলেন শান্ত। ভালো শুরু করেও মাত্র ১১ রানে জার্ভিসের বলে তার হাতেই ক্যাচ তুলে দিয়ে ঘরে ফিরলেন তিনি।

কিন্তু লিটন দাসের ব্যাটে রান আসে ৩৮। তবে সাকিব আসাতে হাল ছাড়লেন লিটন। এমপোফুর বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে বলটি লুফে নেন নেভিল পুলস। ৩৮ রানে ফেরেন লিটন। এরপর সাকিবে আশা দেখছিল দল। কিন্তু আবারো হতাশ করলেন সাকিব। মাত্র ১০ রানে ক্যাচ হয়ে ফিরলেন অধিনায়ক। এরপর দলের হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিম। তাদের ব্যাটে ভর করে দলীয় শতক পার করে বাংলাদেশ দল। এই জুটিতে দেড়শর কাছাকাছি চলে যায় টাইগাররা। কিন্তু রিচমন্ড মুতোম্বোজির স্লোয়ার বলে উইকেট কিপারের কাছে ক্যাচ তুলে দেন মুশফিক। ব্যাক্তিগত ৩২ রানে ফেরেন এ ব্যাটসম্যান। এরপর ব্যাটে আসেন আফিফ হোসেন।

এরইমধ্যে মাহমুদউল্লাহ তুলে নিলেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ অর্ধশতক। আজ আফিফ আর জ্বলে উঠতে পারলেন না। মাত্র ৭ রান করেই ক্যাচ হলেন এ ব্যাটসম্যান। শেষ ওভারে জার্ভিসের বলে পরপর ঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ(৬২) ও মোসাদ্দেক(২)। এরপর মাঠে নামেন সাইফউদ্দিন, ওভার শেষ হওয়ায় ১৭৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।

১৭৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। সাইফউদ্দিন ফিরিয়ে দেন ব্রেন্ডন টেইলরকে। পরের ওভারে সাকিব বোল্ড করেন রেগিস চাকাভাকে। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে আক্রমণে এসেই শফিউল ইসলাম ফিরিয়ে দেন শন উইলিয়ামসকে। দলীয় ৩ রানেই তিন উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের সপ্তম ওভারে সাকিব আক্রমণে আনেন অভিষিক্ত লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলামকে।

অভিষিক্ত আমিনুল নিজের তৃতীয় বলে ফিরিয়ে দেন মুতুমবোদজিকে। মুতুমবোদজি করেন ১১ রান। ইনিংসের অষ্টম ওভারে আবারো উইকেট তুলে নেন শফিউল ইসলাম। নিজের দ্বিতীয় শিকারে বোল্ড করেন ১ রান করা রায়ান বার্লকে।

নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে আবারো আঘাত হানেন আমিনুল। এবার এলবির ফাঁদে ফেলেন মাসাকাদজাকে। বিদায়ের আগে তিনি ২৫ বলে তিন বাউন্ডারিতে তিনি করেন ২৫ রান। দলীয় ৪৪ রানের মাথায় জিম্বাবুয়ে ষষ্ঠ উইকেট হারায়। দলীয় ৬৬ রানের মাথায় রানআউট হয়ে ফেরেন নেভিল মাদজিভা (১৫ বলে ৯ রান)।

এরপর কাইল জারভিসকে নিয়ে টি-টোয়েন্টির প্রথম ফিফটি তুলে নেন রিচমন্ড মুতুম্বামি। ইনিংসের ১৯তম ওভারে ৫৮ রানের জুটি ভাঙেন শফিউল। নিজের তৃতীয় শিকারে ফেরান ফিফটি হাঁকানো মুতুম্বামিকে। বিদায়ের আগে তিনি করেন ৩২ বলে চারটি চার আর তিনটি ছক্কায় ৫৪ রান।

শেষ ওভারে মোস্তাফিজের শিকারে ফেরেন কাইল জারভিস। ২০ বলে দুই ছক্কা আর একটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তিনি করেন ২৭ রান। আর এই উইকেট নেওয়ার মধ্যদিয়ে মোস্তাফিজ টি-টোয়েন্টিতে ৫০ উইকেটের মালিক হন। ইনিংসে শেষ বলে ফিজ বোল্ড করেন আনিসলে এনভুকে।

শফিউল ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে নেন তিন উইকেট। অভিষিক্ত লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম ও মোস্তাফিজ নেন দুই উইকেট। সাকিব ও সাইফউদ্দিন নেন একটি করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ১৭৫/৭, ওভার ২০

মাহমুদুল্লাহ ৬২, লিটন দাস ৩৮, মুশফিক ৩২

জিম্বাবুয়ে: ১৩৬/১০, ওভার ২০

মুতুম্বামি ৫৪, জার্ভিস ২৭, মাসাকাদজা ২৫

ম্যান ওব দা ম্যাচ: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ 

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)