সেই আফগানদের কাছে আবারো হার
শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠলোনা বাংলার টাইগাররা। হারতে হলো কাবুলিওয়ালাদের কাছেই। সেই আফগান জুজুতেই ধরা খেল টাইগাররা।
জয়ের জন্য ১৬৫ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে টাইগার ব্যাটসম্যানরা। রান তাড়া করতে গিয়ে ১৯.৫ ওভারে ১৩৯ রান তুলতেই সব উইকেট হারিয়ে থেমে যায় টাইগারদের ইনিংস। আবারো ব্যর্থ দলের টপ ওর্ডার।
ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে শক্তিশালী আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়া আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ। তবে টাইগারদের আফগান জুজু কাটল না। কোন ভাবেই আফগনাদের সাথে পেরে উঠছে না টাইগাররা। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ২৫ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাকিব বাহিনী।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটে করে ১৬৪ রান সংগ্রহ করে সফরকারী আফগানিস্তান।আফগানদের ছুড়ে দেয়া ১৬৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে আসেন লিটন দাস ও মিস্টার ডিপেন্ডবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম। টাইগাররা আফগানদের থেকে দূরে থাকতে চায় না। তাই মুজিবের ওভারের দ্বিতীয় বলেই তারকাইয়র হাতে বল তুলে দিয়ে ঘরে ফেরেন লিটন। আফগানদের মত শূন্য রানেই ভাঙে টাইগারদের ওপেনিং জুটি। ওয়ান ডাউনে মাঠে আসেন সাকিব। মুশফিক-সাকিবে পথ খোঁজার চেষ্টা। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারে আশাহত করলেন মুসফিক। দলীয় ১১ রানে ফরিদ মালিকের স্ট্যাম্প সোজা বল ঘুরিয়ে পিছনে মারতে গিয়ে বোল্ড হন মুশফিক। তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ৩ বলে ৫ রান।
এরপর ব্যক্তিগত ১৫ রানে মুজিবের কাছেই ধরা দিলেন টাইগার অধিনায়ক। সাকিবের ক্যাচটি লুফে নিয়েছিল আফগান অধিনায়ক রশিদ। মাঠে আসলেন সৌম্য সরকার। নিজের পজিশন বদল হওয়ায় এক বল ও খেলতে পারলেন না এই ব্যাটসম্যান। মুজিবের বলে এলবি হয়ে শূণ্য রানে ঘরে ফেরেন সরকার।
রিয়াদ-সাব্বির হাল ধরেন দলের। পার করেন দলীয় অর্ধশত। রশিদ খানের বলে রিভার সুইপ করেন সাব্বির। বল মিস হয়ে পায়ে লাগলে আম্পায়ার এলবি দেন। সাব্বির রিভিউ চান। আর রিভিউতে দেখা যায় বল গ্লাভসে লেগেই পায়ে লাগে। জীবন পান সাব্বির। না হলে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে বলি হতেন এই ব্যাটসম্যান।
মাহমুদউল্লাহ কোন সুযোগ পেলেন না সাব্বিরের মতন। গুলবাদিন নাইবের বলে বাউন্ডারিতে তুলে মারলে বলটি লুফে নেন তারকাই। ৪৪ রান করে ঘরে ফেরেন এ ব্যাটসম্যান।
সাব্বিরের সাথে যুক্ত হন আগের ম্যাচে আলো দেখানো আফিফ। ঠিক তখনই মাঠ ছাড়েন সাব্বির। মুজিবের বলে নাইবের হাত ২৪ রানে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন সাব্বির। দলীয় শতক পার হওয়ার আগেই ৬ উইকেট হারায় টাইগাররা।
আবারো আম্পায়ারের হাত থেকে বাঁচলেন আফিফ হোসেন। তবে আজ আর আলো ছড়াতে পারলেন না আফিফ.। নাইবের বলে ওভার বাউন্ডারি মারতে গিয়ে ক্যাচ হন জাদরানের কাছে। সাইফউদ্দিনকে ফিরিয়ে উইকেটের খাতা খুললেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। বাংলাদেশেরে দলীয় রান যখন ১২০। একই ওভারে মোসাদ্দেকের উইকেট ও তুলে নিলেন রশিদ খান। এর পর শেষ ওভারে চমক দেখান মুস্তাফিজ, ফরিদ মালিকের ওভারে নেন ১৪ রান। যদিও পঞ্চম বলে ক্যাচ হয়ে ফেরেন ফিজ।
মুজিবুর রহমান একাই ৪ উইকেট নেন। গুলবাদিন নাইব, রশিদ খান ফরিদ ২ উইকেট করে নেন।
এর আগে শুরুতেই আফগানদের উপর চড়াও হন টাইগার অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ম্যাচের প্রথম বলে আফগান ওপেনার রহমাতউল্লাহ গুরবাজকে বোল্ড করে তাক লাগিয়ে দেন এ টাইগার বোলার। পরের ওভারেই বলে আসেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তিনিও কম যান না। নিজের চতুর্থ বলে হযরতুল্লাহ জাজাইকে লিটন দাসের কাছে ক্যাচ বানিয়ে ঘরে ফেরান আফগানদের যখন দলীয় রান ১০।
ফের আফগান শিবিরে আঘাত হানেন সাইফউদ্দিন। তার শেষ বলে ক্যাচ তুলে দেন নাজিব তারকাই। ক্যাচটি লুফে নেন সাব্বির রহমান। দলীয় ১৯ রানে ৩ উইকেট হারান আগফানরা। ফের সাকিবের কাছেই ধরা দেন আফগান ব্যাটসম্যান নাজিবুল্লাহ জাদরান। ব্যাক্তিগত ৫ রানে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দেন এ ব্যাটসম্যান। আসগর আফগান ও মোহাম্মদ নাবিতে পথ খুজতে থাকে আফগানিস্তান।
তাইজুল ইসলামের ১৪ তম ওভারের প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে দেন আসগর আফগান। কিন্তু আজ ভাগ্য আসগরের পক্ষেই ছিল। তাইজুলের বল নো হওয়াতে আবার জীবন ফিরে পান আসগর। তবে সাইফউদ্দিনকে ফেরাতে পারেনি আসগর। সাব্বিরের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন আসগর। ফেরার আগে তুলে নেন ৪০ রান। এর পর আবারো সেই সাইফউদ্দিনে ধরা পড়ে আফগানরা। একই ওভারে শূন্য রানে বোল্ড করলেন গুলবাদিন নাইবকে। যদিও শেষ বলে করিম জানাত ক্যাচ তুলে ছিলেন কিন্তু মিস করেন মুস্তাফিজ।
আর কোন উইকেটের দেখা পাননি টাইগার বোলাররা। ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তান সংগ্রহ করে ১৬৪ রান।
দলের হয়ে মোহাম্মদ নাবী ৮৪ ও আসগর আফগান ৩৯ রান সংগ্রহ করেন।
বাংলাদেশের হয়ে সাইফউদ্দিন একাই তুলে নিয়েছেন আফগানদের ৪ উইকেট। সাকিব নিয়েছেন ২ উইকেট।