যশোরে রাতের আঁধারে বাড়িতে ঢুকে এক আসামির স্ত্রীকে গণধর্ষণ করলো পুলিশ
যশোরের শার্শায় পুলিশের বিরুদ্ধে রাতের আঁধারে বাড়িতে ঢুকে এক আসামির স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী। তিনি ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে যান। কিন্তু পুলিশের মাধ্যমে না যাওয়ায় তার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়নি।
ভুক্তভোগী ওই নারী অভিযোগ করেন, তার স্বামী এক সময় চোরাচালানি পণ্য আনা নেয়ার কাজ করতেন। বর্তমানে ওই কাজের সঙ্গে জড়িত নেই। সর্বশেষ ২৫ আগস্ট শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের এসআই খায়রুল তার স্বামীকে আটক করে ৫০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে চালান দেন। সোমবার রাত আড়াইটার দিকে এসআই খায়রুল, পুলিশের সোর্স কামরুল, লতিফসহ বেশ কয়েকজন তার বাড়িতে যান। প্রথমে তিনি দরজা খুলতে রাজি হননি। এক পর্যায়ে স্বামীকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবে সেই বিষয়ে কথা বলতে এসেছেন জানালে দরজা খুলেন ভুক্তভোগী।
এ সময় এসআই খায়রুল বলেন, পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলে মামলা হালকা করে ৫৪ ধারার মামলা দিবেন। এরপর টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এক পর্যায়ে ঘরের ভেতরে ঢুকে পুলিশের সোর্স কামরুল, এসআই খায়রুলসহ ২/৩জন তাকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানালে, তারা হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য যেতে বলে। এজন্য থানায় না গিয়ে সরাসরি হাসপাতালে গিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরিফ আহমেদ বলেন, বেলা ১১টার দিকে শার্শার ওই নারী জরুরি বিভাগে এসে জানান পুলিশ কর্তৃক গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন তিনি। তিনি শারীরিক পরীক্ষা করাতে চান। ভর্তি হবেন না। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনা পুলিশের রেফারেন্স ছাড়া আমরা পরীক্ষা করতে পারি না। পরে বিষয়টি কোতোয়ালি থানার ওসিকে অবহিত করেছি। তিনি এসে ওই নারীকে নিয়ে গেছেন।
কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা ওই নারীকে আনিনি। শার্শা থানার কেস। সেখানে কথা বলেন।
শার্শা থানার ওসি এম মশিউর রহমান বলেন, ওই নারীর স্বামীকে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ এসআই খায়রুল গ্রেফতার করেছেন ২৫ আগস্ট। এরপর আর ওই বাড়িতে খায়রুল যাননি। অথচ তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করছেন ওই নারী। আর কামরুল ওই নারীর স্বামীর চাচাতো ভাই। স্থানীয় রাজনৈতিক দলাদলির কারণে ওই মহিলাকে কেউ ইন্ধন দিচ্ছে কিনা, সেটি খতিয়ে দেখা দরকার। ওই নারীর স্বামীর বিরুদ্ধে চারটি মাদক মামলা রয়েছে। তবে অভিযোগ যেহেতু উঠেছে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
যশোরের এসপি মঈনুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।