বেনাপোল বন্দরে দুই বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত: অনিয়মের মধ্যে চলছে প্রশাসন

একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেনাপোল স্থলবন্দরে ৩৪ নম্বরের শেড ইনচার্জ মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম দীর্ঘ দুই বছর যাবত কর্মস্থলে অনুপস্থিত কিংবা পলাতক রয়েছে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চাকুরীতে যোগদানের পর হইতে একাধিকার তিনি কর্মস্থলে অননুমোদিত ভাবে অনুপস্থিত থাকতেন এতে কর্তৃপক্ষের অপারেশনাল কার্যক্রম তথা ৩৪ নম্বর শেডের মালামাল লোড-আনলোডের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। যার কারণে কর্তৃপক্ষ একাধিকার একাধিক সময় তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে কিন্তু মোহাম্মদ আশরাফুল এক রোখা এবং গাম্ভীর্য পনা মনোভাব নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোন চিঠির জবাব আজও পর্যন্ত দেয় নাই। তার চলাফেরা আচার-আচরণ অত্যন্ত উগ্র মেজাজের ছিল। ফলে শেডের কার্যক্রমকে স্বাভাবিক রাখতে বাধ্য হয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ গত (৪/৭/২০১৭ইং) তারিখ একাদশ বলে আবু মুসা মোহাম্মদ তারেক নামের এক সুপারিন্টেনডেন্টকে পলাতক আশরাফুলের সাথে পোস্টিং দেয়। রিপোর্ট করেছেন আমাদের প্রতিনিধি রাসেল ইসলাম।

কিন্তু উগ্র আচরণের অভ্যস্ত আশরাফুল ইসলাম এর সাথে কাজ করতে মুসা মোঃ তারেক আপত্তি জানালে মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় অর্থাৎ (১০/৭/২০১৭ইং) তারিখ বন্দর কর্তৃপক্ষ মুসা মোহাম্মদ কে অন্য শেডে বদলি করে। এর কিছুদিন পর পলাতক আশরাফুল একটি কবিতা রচনা করেন যা সম্পূর্ণ মুসা মোহাম্মদ কে ইঙ্গিত করে। এতে করে মুসা মোহাম্মদ নিজেকে বিব্রত বোধ করেন এবং এতে তার সম্মানহানি ঘটেছে বলে তিনি মনে করেন।

এ ব্যাপারে মুসা মোহাম্মদ প্রতিবাদ জানালে আশরাফুল ক্ষিপ্ত হয়ে (২/১০/২০১৭ইং) তারিখ ব্যারাক হাউজে মুসা মোহাম্মদ এর রুমে গিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায় এবং শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে। যার প্রত্যক্ষদর্শীরা হলেন- টিআই মোঃ আবুল হোসেন শেখ, টিআই মোঃ জাহিদুল ইসলাম এবং টি আই মোঃ মোবারক হোসেন। এর বিচার চেয়ে মুসা মোহাম্মদ (১৭/১০/২০১৭ইং) তারিখ পরিচালক (ট্রাফিক) বেনাপোল স্থল বন্দর বরাবর একটি অভিযোগ পত্র জমা দেন এবং আশরাফুল ইসলাম পলাতক বলে তিনি উল্লেখ করেন। পরিচালক (ট্রাফিক) বিষয়টি আমলে এনে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করেন। টিমের কর্মকর্তারা হলেন- মেহেদী হাসান সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক), মোঃ আতিকুল ইসলাম সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) এবং আব্দুল ওয়াদুদ মিল্কি প্রশাসনিক কর্মকর্তা বেনাপোল। কমিটির সদস্যরা (২/১০/২০১৭ইং) সনের ঐ তারিখে পলাতক আশরাফুল এবং মুসা মোহাম্মদের মধ্যে কি ঘটেছিল ঘটনার সময় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য প্রমাণাদি সহ তাদের রিপোর্ট পরিচালক (ট্রাফিক) বেনাপোল স্থল বন্দর বরাবর জমা দেন।

রিপোর্টটিতে কোন প্রকার অস্ত্র,দেশি দা বা লাঠিশোঠা ব্যবহারের কোন প্রমাণ মেলেনি। ফলে(২/১০/২০১৭ইং)তারিখ পলাতক আশরাফুল ইসলাম এবং মুসা মোহাম্মদের মধ্যে গুরুতর কোন মারামারির ঘটনা ঘটেনি বলে কমিটি’র সদস্যরা উল্লেখ করেছেন। দীর্ঘ ২(দুই) বছর অনুপস্থিত থাকা পলাতক আশরাফুল সংযুক্তির মাধ্যমে বেনাপোল স্থলবন্দরে কর্মরত থাকাই তার বেতন ভাতা প্রদান কার্যালয় ঢাকা থেকে দেওয়া হচ্ছে বলে মোঃ রেজাউল করিম উপ-পরিচালক(প্রশাসন), বেনাপোল স্থল বন্দর, যশোর।

গত ৩/৫/২০১৮ইং) তারিখ সার্কুলেশন হওয়া তার এক চিঠিতে উল্লেখ করেছেন এবং পলাতক আশরাফুলের কারণে ৩৪ নং শেডের কার্যক্রম চালানোর জন্য ২১নং শেডের ইনচার্জ জাকারিয়া চৌধুরীকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব প্রদান করেন। পলাতক আশরাফুল গত (৯/১১/২০১৭ইং) তারিখ থেকে ৩ (তিন) দিনের ছুটি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরে না আসায় বেনাপোল স্থলবন্দরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ আশরাফুলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রবিধান মালা- ২০০৪ এর ৪০ এর (ক)/(খ) ও(গ) ধারা মোতাবেক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভাগীয় দপ্তর গুলোয় সুপারিশ নামা পাঠানো হলেও এখনো পর্যন্ত সন্তোষ জনক কোনো উত্তর পাওয়া যাইনি।

এদিকে পলাতক আশরাফুল দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার কারণে তার চাকুরী চ্যুতির সম্ভাবনা রয়েছে।এমন মনোভাব নিয়ে নতুন কৌশলে নেমেছে। (২/১০/২০১৭ইং) তারিখের ঘটনাকে কেন্দ্রকে পুঁজি করে কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে মুসা মোহাম্মদ আর জনকে আসামি করে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।মামলা নম্বর সি,আর-১০১/১৮।।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)