পৃথিবী নামক গ্রহে মানুষই এলিয়েন

বর্তমান পৃথিবীর প্রতি পাঁচজন মানুষের মধ্যে একজন এলিয়েনের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন। ভিনগ্রহ থেকে উড়ন্ত চাকতির মতো মহাকাশযানে চড়ে পৃথিবীর নির্জন প্রান্তরে নেমে আসে এরা। এদের শরীর মানুষের মতো।

এলিয়েন অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও প্রযুক্তির দিক থেকে আমাদের চেয়ে কয়েক আলোকবর্ষ এগিয়ে। পৃথিবী থেকে অনেক দূরে থাকা গ্রহের বাসিন্দা।

বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং আগেই বলেছিলেন, এলিয়েন আছে, অবশ্যই আছে।

নাসার প্রথম সারির বিজ্ঞানী অ্যালেন স্টেফান, বিজ্ঞানী সিলভানো পি কলম্বানো, বিজ্ঞানী থমাস জুরবিউকেন বিভিন্ন সময় বলেছেন আমরা এলিয়েনের খুব কাছাকাছি আছি।

সম্প্রতি একটি চাঞ্চল্যকর বিতর্ক উপস্থিত হয়েছে এলিয়েন নিয়ে। একদল বিজ্ঞানী রীতিমতো যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন জীবের সৃষ্টি মহাকাশে এবং মানুষই এলিয়েন।

জীবের উৎপত্তি সমুদ্রে হয়নি! আমেরিকার ইকোলজিস্ট ড. এলিস সিলভার তার প্রকাশিত একটি বইয়ে রীতিমতো যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে মানুষ পৃথিবীর জীব নয়।

অন্য জীবদের মতো মানুষের সৃষ্টি পৃথিবীতে হয়নি। কয়েক লাখ বছর আগে অন্য গ্রহ থেকে মানুষকে পৃথিবীতে ছেড়ে যাওয়া হয়েছিল।

সিলভার বলেন, মানুষের শরীরে থাকা অনেক ত্রুটি বুঝিয়ে দেয়, পৃথিবী আমাদের নিজের গ্রহ নয়।

ড. সিলিভারের মতে, অন্য প্রজাতির জীবের প্রায় সব প্রয়োজন মিটিয়ে দেয় আমাদের এই পৃথিবী। তাই, যারা মানুষকে ভিনগ্রহ থেকে পৃথিবীতে নামিয়ে দিয়ে গিয়েছিল তারা ভেবেছিল, পৃথিবীর অন্য প্রাণীদের  মতো মানুষের জীবনযাত্রার সব প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে পৃথিবী। কিন্তু অদ্ভূতভাবেই তা হয় না।

মানবজাতিকে গ্রহের সবচেয়ে উন্নত প্রাণী বলে মনে করা হয়। আশ্চর্যের কথা, মানুষই হচ্ছে গ্রহের সবচেয়ে খাপছাড়া ও পৃথিবীর জলবায়ুতে টিকে থাকার জন্য সবচেয়ে অনুপযুক্ত প্রাণী।

বেশিরভাগ প্রাণী সারাদিন, যতক্ষণ খুশি, দিনের পর দিন রৌদ্রস্নান করতে পারে। কিন্তু আমরা কয়েক ঘণ্টার বেশি রোদে থাকতে পারি না কেন?

সূর্যের আলোয় আমাদের চোখ ধাঁধিয়ে যায়। অন্য প্রাণীদের ধাঁধায় না কেন?

প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে পাওয়া বা গজিয়ে ওঠা খাবার মানুষ খেতে অপছন্দ করে কেন?

অদ্ভুতভাবে মানুষের মধ্যেই  প্রচুর ক্রনিক রোগ দেখা দেয় কেন?

ড. সিলভারের মতে ব্যাক পেন হলো অন্যতম দীর্ঘকালস্থায়ী রোগ যাতে বেশিরভাগ মানুষ ভোগে। কারণ তারা পৃথিবীর অনান্য প্রাণীর মতো, হাঁটা চলা ও বিভিন্ন কাজে মাধ্যাকর্ষণের সাহায্য পায় না। এই রোগটিই একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ, যেটা আমাদের বুঝিয়ে দেয় আমাদের দেহ অন্য কোনো গ্রহে বসবাসের উপযুক্ত হয়ে সৃষ্টি হয়েছিল যেখানে মাধ্যাকর্ষণ কম।

মানুষেরা বাচ্চার মাথা বড় হওয়ার জন্য নারীদের স্বাভাবিক উপায়ে প্রসব করতে অসুবিধা হয়। অনেক মা ও শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হয়। কিন্তু পৃথিবীর অন্য কোনো জীব প্রজাতির এরকম সমস্যাই নেই। মানুষের ইউটেরাসের ভেতর থাকা জায়গার তুলনায় শিশুর আয়তন অনেক বড় হয়। কারণ উঁচু পর্যায়ের পুষ্টি পায় বলে।

মানুষের দেহে ২২৩টি অতিরিক্ত জিন থাকাও স্বাভাবিক নয়। কারণ পৃথিবীর অন্য প্রজাতির দেহে অতিরিক্ত জিন নেই।

পৃথিবীর কোনো মানুষই ১০০% সুস্থ নয়। প্রত্যেকেই এক বা একাধিক রোগে ভোগে।

মানুষের  ঘুম নিয়ে গবেষণা করে গবেষকরা বলছেন পৃথিবীতে দিন ২৪ ঘণ্টার, কিন্তু আমাদের দেহের অভ্যন্তরীণ ঘড়ির মতে, আমাদের দিন হওয়া উচিত ছিল ২৫ ঘন্টার। এবং এটা কিন্তু আধুনিক যুগে সভ্যতার বিকাশ ও উল্কাগতির জন্য হয়নি। মানবজাতির সূত্রপাত থেকেই দেহঘড়িতে একটি দিনের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ২৫ ঘণ্টা।

আমাদের ত্বকে ট্যান পড়া বা সূর্যরশ্মির প্রভাবে চামড়া কালো হওয়া সেটাই প্রমাণ করে সূর্য রশ্মি মানুষের পক্ষে উপযুক্ত নয়!

বিভিন্ন বিজ্ঞানী সিলভারের থিওরিটির সমালোচনা করেছেন ও তির্যক চোখে দেখেছেন। কিন্তু অনেকে তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাই তুমুল বিতর্ক চলছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত  মানবজাতির উৎপত্তি সম্পর্কে অবিতর্কিত উত্তর পাওয়া যাচ্ছে।

বিভিন্ন বিজ্ঞনী বলেছেন, ড. সিলভার যে যুক্তিগুলো হাজির করেছেন, সেগুলি কিন্তু বাস্তব। সেটাও ফেলে দেয়ার নয়। সত্যিই তো পৃথিবীর অনান্য প্রজাতির জীবের চেয়ে আমরাই কেন আলাদা হলাম। দেখা যাক বিজ্ঞান আগামী দিনে তাঁর প্রশ্নের কী উত্তর দেয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)