জাতীয় কবির ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৬ সালের আগস্ট মাসে শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।

কাজী নজরুল ইসলাম বিদ্রোহী কবি নামে খ্যাতি লাভ করেন জীবদ্দশাতেই। তার আবির্ভাব ধূমকেতু বা ঝড়ের মতোই। তিনি নিজেই লিখেছেন, ‘আমি দুরন্ত বৈশাখী ঝড়।’ তবে তার লেখা অমর কবিতা ‘বিদ্রোহী’র জন্যই তিনি বিদ্রোহী কবিরূপে সমধিক পরিচিত হয়ে ওঠেন। তার ওই কবিতা প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন প্রবল একটা ঝড় বয়ে যায়। সে ঝড় বাংলা কবিতার ক্ষেত্রে, সে ঝড় মানুষের চিন্তা-চেতনার মধ্যে। কবিতাটি প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কবি নজরুল যেন রাতারাতি বিখ্যাত ও সুখ্যাত হয়ে ওঠেন।

বাংলা সাহিত্যে তার অবদান অসামান্য। অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী ও সাম্যের এই কবি আছেন কোটি কোটি বাঙালির হৃদয়ে। জীবদ্দশায় তিনি সর্বদা হিন্দু-মুসলমান মিলনের গান গেয়েছেন। তার ইসলামি সঙ্গীত ও গজল আজও মানুষের হৃদয় কাড়ে। পাশাপাশি তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন শ্যামাসঙ্গীত রচনার ক্ষেত্রেও। বিদ্রোহী কবির মর্যাদা পেলেও তিনি ছিলেন মূলত প্রেমের কবি। কাজী নজরুল ইসলামই এ দেশের সমাজচেতনা ও রাজনৈতিক জগতের সর্বোত্তম কবি, যিনি গণমানুষের সঙ্গে সাহিত্যের যোগসূত্র।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্বপরিবারে সদ্য-স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন।

জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন

জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে শোভাযাত্রা সহকারে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে গমন, পুষ্পার্পণ এবং ফাতেহা পাঠ ও পরে কবির মাজার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা। বাংলা একাডেমী কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে একক বত্তৃতার আয়োজন করেছে। বিকেল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে একক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ‘নজরুলের বিদ্রোহ : রাজনীতি, অর্থনীতি ও ধর্মে’ শীর্ষক বক্তৃতা প্রদান করবেন অধ্যাপক মোহীত উল আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ৮ টা ৩০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে কবির সমাধিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কর্মসূচিত অংশগ্রহণ করবেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)