গ্রামীণফোন ও রবির লাইসেন্স বাতিলে চিঠি যাচ্ছে

নানাভাবে উদ্যোগ নিয়েও মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির কাছ থেকে পাওনা টাকা উদ্ধার করতে পারছে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা—বিটিআরসি। প্রথমে ব্যান্ডউইথের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। পরে সেটা তুলে এনওসি বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। এখনো সেই সিদ্ধান্ত বহাল। কিন্তু তার পরও তারা টাকা দিচ্ছে না।

এবার তাদের লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এজন্য তাদের শোকজ করতে চায়। তার জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন। ইতিমধ্যে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ইত্তেফাককে বলেন, ‘বিটিআরসি আইন অনুযায়ী যেটা করার সেটা করেছে। এখন আমরা যে সিদ্ধান্তই দেই না কেন, সেটা অবশ্যই ভেবেচিন্তে, আগ-পিছ বিচার-বিবেচনা করেই দেব। আমাদের এই সিদ্ধান্ত দিতে একটু সময় লাগবে। আমরা চিন্তাভাবনা করছি, কীভাবে কী করা যায়।’

গত ২৪ জুলাই বিটিআরসির সর্বশেষ কমিশন বৈঠকে এ ব্যাপারে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিশন বৈঠকের ২৮ নম্বর সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ‘অডিটের মাধ্যমে শনাক্ত করা গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা এবং রবির কাছে পাওনা ৮৬৭ কোটি টাকা তারা পরিশোধ না করে টেলিযোগাযোগ আইন ২০০১ এর লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করেছে। ফলে একই আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী কেন তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে না—তা ৩০ দিনের মধ্যে জানানোর জন্য শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আইনের বিধান অনুসারে এ বিষয়ে সরকারের পূর্বানুমতির সিদ্ধান্তের জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হলো।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিটিআরসি থেকে সরকারের অনুমোদনের জন্য ইতিমধ্যে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হলেই তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবে বিটিআরসি। তবে মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। ঈদের আগে সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনাও কম।

এর আগে গ্রামীণফোন ও রবির ব্যান্ডউইথের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, তা তুলে নিয়ে অপারেটর দুটির এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) বন্ধের ঘোষণা দেয় সংস্থাটি। তখন বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেছিলেন, ‘সিদ্ধান্ত হয়েছে অপারেটর দুটির ব্যান্ডউইথ প্রত্যাহার হয়ে যাবে (তারা ফিরে পাবে)। তাহলে টাকা কীভাবে আদায় হবে? আমাদের আইনে যা আছে, তা আমরা প্রয়োগ করব। আমাদের আইনে যে ব্যবস্থা দেওয়া আছে, তা প্রয়োগ করে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করা হবে। এটুকু সিদ্ধান্ত হয়েছে। টাকাটা পাবলিক ডিমান্ড। রাষ্ট্রীয় টাকা। এই টাকা মাফ করার কোনো সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, ‘এই টাকা অপারেটরগুলোর না দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই, তেমনি বিটিআরসিরও না নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আইসিটি উপদেষ্টার নির্দেশে গ্রাহক-ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের কোনো ধরনের এনওসি দেওয়া হবে না। এমনকি নতুন কোনো প্যাকেজেরও অনুমোদন দেওয়া হবে না। এর পরও যদি টাকা আদায় না হয়, তাহলে আমরা প্রশাসক নিয়োগের কথাও চিন্তা করতে পারি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)