‘মন্দের ভালো’ গানের বাজার এই ঈদে
ঈদ মানেই তো ‘সবকিছুই’ নতুন চাই। নাটক, সিনেমা, টিভি অনুষ্ঠানের পাশাপাশি শ্রোতার খোঁজ-খবর রাখেন ঈদের গানের বাজারে। তবে গত ঈদ দেশীয় গান শ্রোতাদের হতাশ করেছে। নেপথ্যে ছিল গানের সংখ্যা কমে যাওয়া, প্রকাশিত গান মানহীন বেশি হওয়া, সস্তা মিউজিক ভিডিওসহ অনেক কারণ। এছাড়া বিশ্বকাপ ক্রিকেটও গানের বাজারে বেশ বড় একটা প্রভাব ফেলেছে। তবে এই ঈদ গত ঈদের চেয়ে ভালো যাবে, কিন্তু অস্থিরতা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারবে না বলে মনে করছেন অডিও বাজার সংশ্লিষ্টরা।
গত ঈদে মনে রাখার মতো কোনো উল্লেখযোগ্য গান প্রকাশ হয়নি। আগড়ুম বাগড়ুম লিরিক ও বিভিন্ন নেতিবাচক কারণে কয়েকটি গান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এছাড়া হুট করেই ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে কিছু ‘কথিত’ গান! এই সমস্যাকে বর্তমান বাজারের ‘ভাইরাস’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের কর্ণধার ধ্রুব গুহ। তিনি বলেন, ‘সস্তা কিছু গানের কারণে ভালো গানগুলো থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন শ্রোতারা। সবারই উচিত মান ঠিক রেখে গান প্রচার করা।’
গত ঈদের চেয়ে এবার বেশি গান প্রকাশ হবে বলে জানিয়েছে সিডি চয়েস, ধ্রুব মিউজিক স্টেশন, লেজার ভিশন, সঙ্গীতা, ঈগল মিউজিক, সিএমভিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। যেগুলো প্রকাশ হবে এরমধ্যে বেশিরভাগই হবে মিউজিক ভিডিও। তবে লিরিক ভিডিও প্রকাশ হবে, তবে সেটা স্বল্প পরিসরে। গত কয়েকবছরের মতো এই ঈদেও সবচেয়ে বেশি গান প্রকাশ হবে ইউটিউবে। এছাড়া বেশ কয়েকটি ডিজিটাল স্ট্রিমিংয়ে নতুন গান প্রকাশ হবে, সেটার পরিসর একেবারই কম।
এই ঈদে কোন শিল্পীর ক’টি গান বাজারে আসবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। শিল্পী কিংবা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনই সেটা প্রকাশ করছে না। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় দিলরুবা খান, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, এস ডি রুবেল, আসিফ আকবর, আঁখি আলমগীর, তাহসান, ন্যান্সি, কনা, কোনাল, আরফিন রুমী, কাজী শুভ, ইমরান, মিনার, তানজীব সারোয়ার, ঐশী, শেখ সাদী, লিজাসহ অনেকেরই গান প্রকাশ হবে। এছাড়া বেশ কয়েকজন নবীন শিল্পীর গান আসবে বলেও শোনা গেছে।
গানের বাজারের বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে লেজার ভিশনের অন্যতম কর্ণধার মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘গানের মধ্যে যা বিনিয়োগ করছি সেটাই তো ঠিকমতো উঠে আসছে না। গত ঈদে অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। গানের বাজার এমনিতেই মন্দা, তার ওপর ছিল বিশ্বকাপ। তবে এই ঈদ নিয়ে আমরা আশাবাদী। সেভাবে প্রস্তুতিও নিচ্ছি।’
এখন অনেক শিল্পীরই নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। সেকারণে অনেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে নতুন গান প্রকাশ করবেন। নিজের টাকা খরচ করে মিউজিক ভিডিও নির্মাণেও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এসব শিল্পীরা। তবে গত ঈদের চেয়ে এবার শিল্পীদের ব্যক্তিগত উদ্যোগের ব্যাপ্তিটাও বাড়বে বলে মনে করছেন অডিও বাজার সংশ্লিষ্টরা। কুমার বিশ্বজিত্ বলেন, ‘গানের বাজারের অস্থিরতা কাটাতে গানের দিকেই মনোযোগ দিতে হবে। অন্যদিকেও মনোযোগ দিতে সমস্যা নেই, তবে গানের ক্ষতি না হলেই হয়। সাময়িকভাবে আলোচিত হওয়ার জন্য পুরো ইন্ডাস্ট্রির ক্ষতি যেন না হয়, সেটা সবারই মাথায় রাখতে হবে।