গুজব
গুজব সত্য-মিথ্যা আর কুসংস্কারের এক মিশেল। কিন্তু তার মধ্যে কার অংশ কতটুকু সে হিসাব মেলানো দায়। কখনো এটি হতে পারে ডাহা মিথ্যা।আবার কখনোবা হতে পারে প্রতিপক্ষকে দমানোর কৌশল। গুজব কখনো হয়ে ওঠে সামাজিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির এক মোক্ষম হাতিয়ার।
একটা গুজব যে কতটা নির্মম হতে পারে সেটা দেখেছি ঢাকার উত্তর বাড্ডাতে। ছেলে ধরার অপবাদ দিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে শত শত মানুষের উপস্থিতিতে মানুষ নামের হায়েনাদের হিংস্র থাবায় ঝরে গেলো একটি মমতাময়ী মায়ের প্রাণ। না হয় হলো সে ছেলে ধরা !!! তাই বলেকি তাকে মেরেই ফেলতে হবে!!! কি নির্মম,কি হ্নিদয়বিদায়ক। কোন সুস্থ্য মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ মানুষের পক্ষে এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে মাথা কেটে নেওয়ার গুজব,বাস্তবে ও তার কিছুটা প্রমাণ ও মিলেছে কিন্তু কেনই বা এই মাথা কাটা বের হলো আর কেনই বা তারা মাথা কাটছে তার কি কোন তদন্তের রিপোর্ট এই দেশের মানুষের সামনে এসেছে!!! না!! আসেনি। শুধু এসেছে মাথা কেটে নিয়ে যাওয়ার কথা। যদি মাথা কাটা নিউজের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কেন এবং কি জন্য তারা মাথা কাটলো তাদের উদ্দেশ্য কি ছিল এই
তদন্তের সঠিক রিপোর্ট জনগণের কাছে আসতো তাহলে হয়তো পদ্মা সেতুতে মাথা দরকার এই গুজবে মানুষ কান দিতোনা, সন্দেহের বশবর্তী হয়ে কোন প্রাণ অকালে ঝরে যেতো না।
এই গুজব মানুষের মনে বাস্তবে পরিণত হওয়ার মুল কারণ হলো কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার সঠিক তদন্ত না হওয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার তিলকে তাল বানানো।
তারপরও বলি আমরা কি মানুষ হিসাবে এতটা নিচে নেমে গেছি!!! আমাদের কি এতটুকু বিবেকবোধ লোপ পেয়েছে যে শুধুমাত্র সন্দেহের বশবর্তী হয়ে একটা মানুষকে নির্দয় আর নির্মম ভাবে হত্যা করবো!!!
হোকনা সে ছেলে ধরা কিংবা কোন অপরাধী তাই বলেকি তাকে মারতে হবে!!! দেশেতো আইন আছে,বিচার আছে, অন্যায় করলে সাজা আছে তাহলে কেন আপনি আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন,,তাহলে তার সাথে আর আপনার সাথে পার্থক্যটা থাকলো কোথায়।
তাই বলবো আমরা গুঁজবে কান না দিয়ে সঠিক তথ্য নিয়ে অপরাধী চিহ্নিত করে অপরাধীকে আইনের হাতে তুলে দিবো আর নিজেরা আইন হাতে তুলে নিয়ে অপরাধীর কাতারে সামিল হবোনা।
“কুরের কাজ কুকুর করিবে
কামড় দিবে পায়,
তাই বলে কি কুকুরকে কামড়ানো
মানুষের সোভা পায়”””
দৈনিক সাতক্ষীরা/এসকে এফ