পাঁচ দিনের রিমান্ডে মিন্নি
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে তাকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।
শুনানি শেষে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী।
এদিন দুপুরে মিন্নিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। পরে শুনানি শেষে মিন্নির রিমান্ড আদেশ দেয় আদালত।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, আমরা আদালতের কাছে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিন্নির ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করি। বিচারক পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মঙ্গলবার মিন্নিকে প্রায় ১৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ এই মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনে তাকে রাত সাড়ে নয়টার দিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
বরগুনার এসপি মো. মারুফ হোসেন বলেন, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শী মিন্নি। তার বক্তব্য রেকর্ড ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সকালে বরগুনা পুলিশ লাইনে আনা হয়। এ সময় কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়ায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
মিন্নিকে গ্রেফতার দেখানোর পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন এসপি।
জিজ্ঞাসাবাদে ও অন্যান্য সোর্স থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মিন্নির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ার কথা বলেন এসপি মারুফ।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা পৌরসভার মাইঠা এলাকার নিজ বাসা থেকে মিন্নিকে পুলিশ লাইনে নেয়া হয়। সকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিন্নিকে পুলিশ লাইনে আনার সময় তার সঙ্গে বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও ছিলেন।
ডেইলি বাংলাদেশ/এসআর
এদিকে মিন্নিকে গ্রেফতারের পর একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন এসপি মো. মারুফ হোসেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৬ জুন রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার পর এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত সাত আসামিকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।
এছাড়া আরো সাতজনকে সন্দেভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়। মামলার মূল রহস্য উদঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্তের জন্য এ মামলার ১ নং সাক্ষী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে ডেকে এনে মামলার ঘটনা সংক্রান্তে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও সুদীর্ঘ সময় যাবৎ প্রাপ্ত তথ্যাদি পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ পূর্বক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হওয়ায় মামলার মূল রহস্য উদঘাটন এবং সুষ্ঠু তদন্তের নিমিত্তে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে রাত ৯টায় গ্রেফতার করা হয়।
বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার বাদী নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ ও মামলার প্রধান সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি পরস্পর দোষারোপ করে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
একই সময়ে বন্দুকযুদ্ধে নিহত নয়ন বন্ডের মা শাহিদা বেগমও মিন্নিকে জড়িয়ে বিবৃতি দেয়ায় রিফাত হত্যার ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নেয়।