জেনে নিন, দীর্ঘদিন মৌসুমি ফল সংরক্ষণের চমৎকার উপায়!

এই মৌসুমে আম, কাঁঠাল ও লিচু এই ফলগুলোর মিষ্টি গন্ধে চারপাশ ম ম করে। সবারই পছন্দের ফলগুলো পাওয়া যায় এই মৌসুমে। যা অন্য কোনো সময় পাওয়া যায় না। কিন্তু পছন্দের ফল বলে কথা, বছরের অন্য সময়গুলোতেও খেতে চায় মৌসুমি ফল প্রিয় অনেকেই। তবে এসব ফল চাইলেই সারা বছর পাওয়া যায় না । কিন্তু মৌসুম পাল্টে গেলেও এই ফলগুলোর স্বাদ পেতে পারেন ঘরোয়া উপায়ে ফল সংরক্ষণ করে। চলুন জেনে নেয়া যাক মৌসুমি এই ফলগুলো সংরক্ষণের উপায়-

আম
১. স্বাদ, গন্ধ এবং পুষ্টিগুণের কোন তারতম্য না ঘটিয়ে আম এক মাসের মতো সংরক্ষণ করা যায়। পুরো পাকা দেখে কয়েকটি আম বাছাই করে নিন। তবে খেয়াল রাখতে হবে আমগুলো যেন একটু শক্ত ধাঁচের হয়। এবার খবরের কাগজ দিয়ে প্রতিটি আম আলাদা আলাদা মুড়িয়ে নিন। একটি বড় পলিব্যাগ নিয়ে তাতে আমগুলো ভরে ফেলুন। এরপর পলিব্যাগটি ফ্রিজের নরমাল চেম্বারে সংরক্ষণ করুন। এভাবে ১৫ দিন নাগাদ আম স্বাভাবিক থাকে। তবে এক মাস পর্যন্ত আম রাখতে চাইলে কয়েকদিন পরপর খবরের কাগজ পাল্টে দিতে হবে। সেই সাথে লক্ষ্য রাখতে হবে আমে কোন পরিবর্তন ঘটেছে কিনা।

২. এই পদ্ধতি ছাড়াও আরেকটি পদ্ধতিতে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আম সংরক্ষণ করে রাখা যায়। এক্ষেত্রে স্বাদ কিছুটা কমে যেতে পারে। ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করার এই পদ্ধতিতে সাত-আট মাসের মতো সময় আম সংরক্ষণ করা যায়। এজন্য প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে তা হলো, পাকা দেখে কিছু আম বেছে নিন। এবার এই আমগুলোর খোসা ফেলে দিন। ছোট ছোট টুকরো করে কেটে জিপলক ব্যাগে ভরে রাখুন। এবার ভালো করে মুখ বন্ধ করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন।

৩. আস্ত আম সংরক্ষণ করতে চাইলে খবরের কাগজে আলাদাভাবে মুড়িয়ে নিন প্রত্যেকটি আম। এবার একটি কাপড় বা তুলার ব্যাগে ভরে রাখুন। কাপড়ের ব্যাগের মুখ ভালো মতো বন্ধ করে সেটি বড় পরিষ্কার পলিথিনে ভরে ফেলুন। এবার এটি ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখুন। এভাবে মাস ছয়েক নাগাদ ভাল থাকবে আম। তবে পুরো পুষ্টিগুণ পেতে চার মাসের মধ্যেই খেয়ে ফেলা উত্তম।

৪. এছাড়া আম ব্লেন্ড করে আমের পাল্প দিয়ে আইস বানিয়ে রাখতে পারেন।

কাঁঠাল
সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর এই ফলটি সংরক্ষণ করে দীর্ঘদিন রাখা যায় খুব সহজেই। নরম কোয়ার কাঁঠাল হলে সংরক্ষণের জন্য এটিকে প্রথমেই একটি চালনিতে নিয়ে চেলে নিতে হবে। পাল্প বের হয়ে এলে এবার আইসবক্স বা ছোট পাত্রে নিয়ে তা ডিপফ্রিজে জমতে দিতে হবে। এবার সেখান থেকে এটিকে বের করে জিপলক ব্যাগে ভরে আবার ডিপফ্রিজে রেখে দিন। এভাবে ছয় মাস পর্যন্ত স্বাদ এবং গন্ধ অটুট থাকে কাঁঠালের। আর শক্ত কাঁঠালের ক্ষেত্রে কোয়ার মাঝ বরাবর কেটে ফেলুন। বিচি ফেলে এয়ারটাইট বক্সে ভরে ডিপফ্রিজে রেখে দিন। তবে একবার ডিপফ্রিজ থেকে বের করে ফেললে সেটি আবার সংরক্ষণ করা যাবে না।

লিচু
১. মৌসুমি ফলের মধ্যে রসালো ফল হিসেবে লিচুর রয়েছে আলাদা কদর। এই ফলটিকেও সংরক্ষণ করা যায় খুবই সহজ উপায়ে। নরমাল ফ্রিজে সংরক্ষণ করলে ১৫ দিনের মতো ঠিক থাকে এই লিচু। এক্ষেত্রে দাগবিহীন তাজা লিচু বেছে নিন। এবার সেগুলোকে ডাল পাতা সহই খবরের কাগজে মুড়িয়ে নিন। তারপর ফ্রিজের নরমাল চেম্বারে রেখে দিন। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন লিচু যেন ফ্রিজের গায়ের সাথে লেগে না থাকে। এতে লিচুতে পচন ধরে যাবে দ্রুত।

২. ডিপ ফ্রিজে লিচু সংরক্ষণ করা যায় বেশিদিন ধরে। এক্ষেত্রে তাজা দেখে লিচু বেছে নিন। খেয়াল রাখবেন লিচুর গায়ে যেন কোন দাগ না থাকে। এক ইঞ্চি পরিমাণ বোঁটা রেখে ধারালো কাচি দিয়ে কেটে নিন। এবার খবরের কাগজে মুড়িয়ে নিন। একটি ভালো কাপড়ের ব্যাগে ঢুকিয়ে ভালো মতো মুখ আটকে দিন। পলিব্যাগে ভরে এবার ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। এভাবে মাস তিনেক ভালো থাকবে লিচু।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)