সাতক্ষীরায় শাহীনকে জখম করে ভ্যান ছিনতায়ের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীসহ আটক-৩
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা উপজেলার ধানদিয়া এলাকায় আলোচিত ভ্যান ছিনাতাইয়ের ঘটনায় মুল পরিকল্পনাকারী নাইমুল ইসলাম নাঈম (২৪) ও তার দুই সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ। সে যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার বাবর আলী মোড়লের ছেলে। আটককৃত অন্যরা হলো সাতক্ষীরা সদরের গোবিন্দকাটী গ্রামের মৃত হামজার আলীর ছেলে বাকের আলী (৪৫) ও কলারোয়া থানার আলাইপুর গ্রামের নুনু মিস্ত্রির ছেলে আরশাদ পাড় (৬৫)।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোঃ সাজ্জাদুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে একথা নিশ্চিত করেন।এসময় তিনি জানান, শাহিনের ভ্যান ছিনতাইকারীর মুল পরিকল্পনা কারী নাইমুল। তাকে সোমবার সকালে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। পুলিশের কাছে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত শুক্রবার (২৮ শে জুন) নাইমূলসহ তিনজন শাহিনের ভ্যান ভাড়া করে নিয়ে আসে যশোর জেলার কেশবপুর বাজার থেকে। তারপর পাটকেল ধানদিয়া এলাকায় তারা পৌঁছালে ফাকা জায়গা দেখে শাহিনকে ভ্যান রেখে চলে যেতে বলে ।
অসহায় শাহিন ভ্যান রেখে যেতে রাজী না হলে তারা তাকে ভ্যানের রডের সাথে ধাক্কা দিয়ে মাথা থেঁতলে দেয়। এবং তার ভ্যানটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সাতক্ষীরার সদরে ঝাউডাঙ্গা বাজারে এসে তারা প্রথমে বাকের আলীর কাছে ভ্যানের ৪টা ব্যাটারি ৬ হাজার দুই’শ ছত্রিশ টাকা বিক্রি করে। এরপর কলারোয়া বাজারের মির্জাপুর মোড়ে এসে আরশাদ পাড়ের কাছে ভ্যানটি সাড়ে ৭ হাজার টাকা বিক্রি করে। পুলিশ ভ্যানের ব্যাটারিসহ ওই দিন বিকাল ৫ টার সময় বাকের আলী ও ভ্যান উদ্ধার করে আরশাদ পাড়কে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য গত শুক্রবার (২৮ শে জুন) যশোর জেলার কেশবপুর মঙ্গলকোট গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে শাহীন (১৪) । সে কেশবপুর দোলঘাটা দার সুন্নত দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বাড়তী আয়ের আশায় ওই দুর্বৃত্তদেরকে ভাড়া নিয়ে কেশবপুর বাজার থেকে বের হয়ে সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ার দিকে রওনা হয়। ধানদিয়া গ্রামের হামজাম তলা মাঠে ঢুকে একটি পাটক্ষেতের পাশে দুর্বৃত্তরা শাহীনের মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়, নিয়ে যায় শাহীনের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটিও।
ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে সে। পরে জ্ঞান ফিরে কান্না শুরু করলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানায় খবর দেয়। পরবর্তীতে রোববার (২৯ জুন) ভোর ৪টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার অপারেশন শেষ করেন চিকিৎসকরা
আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে থাকবে সে। শনিবার (২৯ জুন) রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন। তিনি জানান, ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালিয়ে সংসার চালানো কিশোরটির দায়দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।