ইংল্যান্ডের সাথে পাতানো ম্যাচ খেলেছে ভারত!
বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরের চলছে সেমিতে ওঠার লড়াই। ক্রিকেট বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গেছে আসরের অন্যতম ফেভারিট ভারত। ইংলিশদের ৩৩৭ রান তাড়া করে ৩১ রানের হার আপাত দৃষ্টিতে খুব একটা আপত্তিকর না হলেও, লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ সমৃদ্ধ দলটি যেভাবে খেলেছে, তাতে অবাক ক্রিকেটভক্তরা। ভারতের ব্যাট করার ধরণ দেখেই অনেকের ধারনো পাতানো ম্যাচ খেলেছে তারা। ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই মনে হয়েছে, ভারত জয়ের জন্য খেলছে না। রোহিতের শতক, কোহলির অর্ধশতক আর হাতে পাঁচ উইকেট থাকার পরও মাত্র(!) ৩০৬ রানেই থেমে গেছে তাদের ইনিংস।
শধু ক্রিকেট ভক্তরাই নয় এই নিয়ে বেশ সমালোচনা করতে ছাড়ছে না সাবেক ক্রিকেটাররা ও বিশেষজ্ঞরা। পাহাড় সমান রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ২৮ রান তোলে ভারত, যা এবারের বিশ্বকাপেই সর্বনিম্ন। তবু, শেষ ১১ ওভারে জয়ের জন্য ১১২ রান দরকার ছিল তাদের। টি-টোয়েন্টির যুগে এ রান খুব কঠিন কিছু নয়।বিশেষ করে, যখন হাতে আছে মহেন্দ্র সিং ধোনি, হার্দিক পান্ডিয়া, ঋষভ পান্থের মতো হার্ডহিটার ব্যাটসম্যানরা।
শেষের দিকে ধোনি ও কেদার যাদবের কর্মকাণ্ডে অবাক সমর্থকেরা। হাতে উইকেট থাকার পরও চার-ছক্কার চেষ্টা না করে এক-দুই রান নিয়ে সময় কাটিয়েছেন তারা। এ সময় মনে হয়েছে, হারার আগেই যেন হেরে বসে আছে ভারত!
তাদের এমন অদ্ভুত ব্যাটিংয়ে ক্ষেপেছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। সমালোচনা করেছেন সৌরভ গাঙ্গুলী, সঞ্জয় মাঞ্জেরেকার, হর্ষ ভোগলের মতো ক্রিকেট বিশ্লেষকেরা।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জেরেকার টুইটারে লিখেছেন, ভারতের জয়রথ থামানোর মতো যদি কোনো দল থাকে, সেটা ইংল্যান্ডই। তবে, শেষ কয়েক ওভারে ধোনির কার্যক্রম বিভ্রান্তিকর।
বিখ্যাত ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে লিখেছেন, হতাশাব্যঞ্জক সমাপ্তি। এক বল-এক রানের পার্টনারশিপে খেলায় জেতা যায় না। পান্ডিয়া (হার্দিক পান্ডিয়া) থাকা পর্যন্ত (খেলা) উত্তেজনাপূর্ণ ছিল।
পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার লিখেছেন, ভারত আরও ভালো খেলতে পারতো। প্রথম ১০ ওভারে আগ্রাসী চেষ্টা ও পরে পাঁচ উইকেট হাতে রেখে, তারা চমক দেখাতে পারতো।
শোয়েবের টুইটের রিপ্লাইয়ে মেহরান খান নামে এক ব্যবহারকারী ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার নাসের হুসেইন ও সৌরভ গাঙ্গুলীর কথোপকথন উল্লেখ করে লিখেছেন,
‘নাসের: আমি বুঝি না, ধোনি কী করছে? অন্তত চেষ্টা তো করবে! এখন ভক্তরাও চলে যাচ্ছে।
সৌরভ: আমার কাছে এর কোনো ব্যাখ্যা নেই।’
সুরেশ রাও নামে আরেকজন লিখেছেন, সৌরভ গাঙ্গুলী ধোনি ও যাদবের ব্যাপারে ঠিক বলেছেন। শেষ পাঁচ ওভারে যদি বল সীমানাছাড়া করতে না পারেন, তবে যে পারে, তাকে জায়গা করে দেন।
সমালোচনার আগুনে সবচেয়ে বেশি পুড়ছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ফিনিশার বলে খ্যাত ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। কয়েকজন তো তিনিসহ গোটা টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধেই ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ তুলেছেন।
সবাই যে সমালোচনা করছে তা নয়। কয়েকজন ধোনির পক্ষেও সাফাই গেয়েছেন। তাদের দাবি, এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান তার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। দিনশেষে তিনিও মানুষ, তারও সামর্থ্যের সীমা আছে। তাই, ধোনির চেষ্টা নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিৎ নয়।