আজ থেকে সুন্দরবনে মাছ ধরায় দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি
আজ থেকে সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে জেলেদের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন-বিভাগ। মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন করার জন্য জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস জেলেরা বন বিভাগের পক্ষ থেকে চিহ্নিত খালে কোন প্রকার মাছ ধরতে পারবে না। তবে, এ সময়ের মধ্যে জেলেরা বন বিভাগের অনুমতি সাপেক্ষে নদীতে মাছ ধরতে পারবেন।
বন-বিভাগ-সূত্রে জানা যায়, জুলাই ও আগস্ট মাসে পাস-পারমিট নিয়ে বনের অভ্যন্তরের খালে এক শ্রেণির অসাধু জেলে জাল দিয়ে মাছ ধরার নামে বিষ প্রয়োগ করে চিংড়ি মাছ আহরণ করে। কিন্তু ওই বিষে খালের মাছসহ জীববৈচিত্র ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যার ফলে মাছ মরে খালের পানিতে ভেসে ওঠে। বিষে মরা মাছ খেয়ে অন্যান্য জীব-জন্তুও মারা যায়, পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এ কারণেই সুন্দরবন বন বিভাগ এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
সাতক্ষীরা সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জিএম রফিক আহম্মেদ বলেন, আমরা পাস দিচ্ছিনা। আর যারা পাস নিচ্ছে তারা বড় নদীতে মাছ ধরতে পারবে। ছোট খালে তারা মাছ ধরতে পারবেনা। বনে আমাদের স্মার্ট টিম কাজ করতেছে। আমরাও টহল জোরদার করেছি। খালে যদি কেউ মাছ ধরে সে ক্ষেত্রে আমরা তাদের আটক করব ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এদিকে বিভিন্ন জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সুন্দরবনে খালে মাছ ধরায় নিষেধ থাকলেও কোন অসুবিধা হবে না তাদের। বড় নদী গুলোতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন তারা। এ ছাড়াও নিষেধাজ্ঞা জারির কারনে মা মাছ অবাধে ডিম ছাড়তে পারলে মাছ ধরার মৌসুমে বেশি মাছ পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
উল্লেখ্য, প্রতি বছরের জুলাই-আগস্ট মাছের প্রজনন মৌসুম। সুন্দরবনে ছোটবড় ১৩টি নদ-নদীর পাশাপাশি ৪৫০টি খাল প্রবাহিত হয়েছে। এসব নদ-নদী খালে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ী, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মালাস্কা ও লবস্টার পাওয়া যায়। প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ায় সুন্দরবনের ৪৫০টি খালে আজ থেকে ৩১’শে আগস্ট পর্যন্ত দু‘মাস মাছ আহরণ বন্ধ থাকবে। জীব বৈচিত্র্য ও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় পূর্ব ও পশ্চিম সুন্দরবনের ৪ শতাধিক খালে জুলাই ও আগস্ট মাসে মাছ ধরা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন বিভাগ।