বহু বিয়ে করে কোটিপতি তালা উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যানের ভাই জিয়া
প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করে নারীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে ঘর ছাড়া করা যার মুল উদ্দেশ্য। কারও কারও স্বামীর সংসার থেকে ফুসলিয়ে এনে বিয়ে করে সর্বস্ব লুটে নিয়ে বহু নারীকে পথে বসিয়েছে তালা উপজেলার বারুইহাটি গ্রামের মৃত নুর আলী সরদারের ছেলে জিয়াউর রহমান জিয়া (৪২)। এলাকায় লম্পট হিসেবে পরিচিত জিয়া ১১ টি বিয়ের নায়ক।
তার লালসার শিকার হয়েছে ১২ বছরের কিশোরী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের নারী। তার নানা অপকর্মের কথা সাংবাদিকদের জানালেন তার এক স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম (৪০)। তার স্বামীর অপকর্মের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, রাজশাহী জেলার মৃত তছলিম উদ্দীন মন্ডলের মেয়ে ও এক প্রবাসীর স্ত্রী তিনি।
প্রায় ৭ বছর আগে জিয়ার বড় বোন তালা উপজেলার খলিল নগর সরাকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাছলিমা বেগমের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়।পরবর্তীতে তাছলিমা তাকে বলেন তাদের ভাইদের অনেক ক্ষমতা আছে ১৪ লক্ষ টাকা দিলে যে কাউকে সরকারি চাকরী দিতে পারবেন। পরবর্তীতে চাকরী পাওয়ার আশায় জিয়ার হাতে ওই টাকা দেন ফেরদৌসী। কিছুদিন গত হলেও চাকরী না দিয়ে তার সাথে বিভিন্ন প্রকার তাল বাহনা করতে থাকে সে।
এরপর টাকা উদ্ধার করতে ফেরদৌসী সাতক্ষীরায় আসলে তাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করে জিয়া। কিছুদিন সংসার করার পরে তাকে বাপের বাড়ী থেকে ৮ লাখ টাকা নিয়ে আসার জন্য মারধর শুরু করে। টাকা আনতে ব্যর্থ হলে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয় ওই নরপিচাশ।
সে বাধ্য হয়ে তার আগের ঘরের ছেলেকে নিয়ে তালায় একটি বাড়ী ভাড়া নিয়ে বসবাস আরম্ভ করে। বাড়ী থেকে তারিয়ে দিয়েও ক্ষ্যান্ত হয়নি জিয়া।তালা উপজেলা থেকে তারিয়ে দেওয়ার জন্য ভাড়া বাড়ীতে যেয়ে চালাতে থাকে নির্যাতন। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে থানা পুলিশের আশ্রয় নেয় ফেরদৌসী। সেখানে সমাধান না পেয়ে সরদার জিয়াউর রহমান জিয়া, তার ভাই সরদার মশিয়ার রহমান,কবির রহমান ও তার বড় বোন তাছলিমা পারভীনের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা আদালতে যৌতুকের মামলা দায়ের করে।
বিষয়টি জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে ফেরদৌসী ও তার ছেলে ফাহাদ ইসলাম সুমনকে (১৫) মারধর ও খুন জখমের হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে নিরপত্তাহীনতায় ভুগছে ফেরদৌসী। উল্লেখ্য উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তার ছোট ভাই সরদার মশিয়ার রহমান তার অনেক ক্ষমতা। এমপি মন্ত্রী প্রশাসন সব তার হাতের মুঠোয় এলাকায় এমনই প্রচার দিয়ে বেড়ান ভাইস চেয়ারম্যান। এজন্য শত অপকর্ম করেও পার পেয়ে যাচ্ছে জিয়া এমনই জানালেন স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেকে জানান, এমন কোন অপকর্ম নেই যে সেটা জিয়া করেনা। তারপরও কোন প্রকার সাজা হয়না তার। এর একটাই কারণ তারা এলাকায় প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এলাকা এবং বিভিন্ন জায়গায় ১১ টার অধিক বিয়ে রয়েছে তার। প্রতরণা করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে নারীদের সর্বস্বান্ত করায় তার মূল কাজ।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য জিয়াউর রহমান জিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন(০১৭১২৭৭৮১৩৭) নাম্বারে কল দিলে বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এসকল বিষয় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সরদার মশিয়ার রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,দু’একটা কুলঙ্গার থাকে তার মধ্যে আমার ভাই একজন। বিভিন্ন প্রকার অপকর্ম এবং বহু বিয়ের কথা স্বীকার করেন তিনি । এছাড়া তার ভাই বাড়িতে থাকেনা কোথায় আছে সেটা তাদের জানা নেই। তাছাড়া তার ভাইয়ের আরেক স্ত্রী ফেরদৌসীকে সে এবং তার পরিবার কোন প্রকার হুমকি দেয়নি বলে জানান তিনি।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ মেহদী রাসেল বলেন, জিয়াউর রহমান জিয়া বর্তমানে যশোর থাকে তার বিরুদ্ধে থানায় কোন অভিযোগ নেই। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।
জীবনের নিরপত্তা ও সকল বিষয়ের প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে ভুক্তভোগী ফেরদৌসী।