বিনেরপোতায় যুবককে বেঁধে মারধর: এলাকাবাসীর ক্ষোভ
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতায় মিথ্যা চুরির অপবাদ দিয়ে মোস্তফা মল্লিক (১৯) নামে এক যুবককে পিটিয়ে জখম ও হাত-পা বেঁধে নদীর চরে ফেলে রাখে স্থানীয় পদ্মা হ্যাচারীর মালিক বকুল। স্থানীয়রা জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে বুধবার (২৬ জুন) দুপুর ১টার দিকে পদ্মা হ্যাচারীর মালিক বকুলের নির্দেশে বিনেরপোতায় অসহায় দিনমজুর মল্লিক রাশেদ’র ছেলে মোস্তফা মল্লিককে হ্যাচারীতে ডেকে নিয়ে যায় অফিস সহকারী। পদ্মা হ্যাচারীর মালিক বকুল ও তার সহযোগীরা মিলে মোস্তফা মল্লিককে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধরক মারধর করে। এসময় দরিদ্র পরিবারের সন্তান মোস্তফা মল্লিকের কাছে থাকা বর্তমান কর্মস্থলের মালিক মো. মিন্টুর ২৫ হাজার টাকা এবং একটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় হ্যাচারীর মালিক বকুল। পরে মৃত ভেবে হাত-পা বেঁধে বেতনা নদীর চরে ফেলে রাখে। বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সহযোগিতা নেয় বকুল। পুলিশও ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে আসে। ঐদিন বিকাল ৫টার দিকে স্থানীয়রা মোস্তফা মল্লিক নদীর চরে পরে থাকতে দেখে তার পরিবারকে খবর দেয়। স্থানীয়দের মধ্যে মনির, শওকত, সোহেল, সাগর, রোকসানা, ময়না, সালমাসহ অনেকের সহযোগিতায় মল্লিককে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ১নং ওয়ার্ডের ৮নং বেডে চিকিৎসার অভাবে আসংখ্যজনক অবস্থায় রয়েছে মোস্তফা মল্লিক। বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করেছেন কিনা জানতে চাইলে মোস্তফা মল্লিকের মা বলেন, আমরা গরীব মানুষ। অর্থের অভাবে একমাত্র ছেলের চিকিৎসা করতে হিমশিম খাচ্ছি। ছেলের এমন গুরুত্বর অবস্থায় রেখে থানায় গিয়ে মামলা করবো কিভাবে। আমার ছেলেটাকে বাঁচাতে আপনাদের (সাংবাদিকদের) সহযোগিতা কামনা করছি। এব্যাপারে শনিবার (২৯ জুন) সকাল ৯টায় সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলামের বাসভবনে বসাবসির কথা আছে বলে জানান মোস্তাফা মল্লিকের অসহায় পিতা মল্লিক রাশেদ। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে মিথ্যা মামলা ও পুলিশ দিয়ে হয়রাণী করবে বলে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে পদ্মা হ্য্যাচারীর মালিক বকুল। বর্তমানে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে এ এলাকার অনেক পরিবার। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমান ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্য্যান মো. নজরুল ইসলামের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসী। উল্লেখ্য, বর্তমানে খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলের কয়েকটি হ্যাচারী ভারতীয় পোনা ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে বিনেরপোতা এলাকার পদ্মা হ্যাচারী অন্যতম। পদ্মা হ্যাচারীর এসব অবৈধ ব্যবসার কথা কেউ জানালে তাকেই এভাবেই মারধর করে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি র্যাবের অভিযানে পদ্মা হ্যাচারীকে জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।