এশিয়ার যে দুই দেশে সর্বাধিক তাপমাত্রার রেকর্ড:১২৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট
পৃথিবী ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। এ নিয়ে বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে তাবৎ রাষ্ট্রনেতারা আওয়াজ তুলছেন। তবে সম্প্রতি সৌদি আরবে তাপমাত্রার পারদ দেখে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে আবহাওয়াবিদদের।
‘ওয়ার্ল্ড মেটিরিওলজিক্যাল অর্গানাইজেশন’ -এর তরফ থেকে সেই রেকর্ড তাপমাত্রার পরিসংখ্যান দিয়ে মঙ্গলবার একটি তালিকা দেয়া হয়েছে। এতে এশিয়ার মধ্যে কুয়েত ও পাকিস্তান- এই দুই জায়গায় সব থেকে বেশি তাপমাত্রা ধরা পড়েছে। যদিও সেটা এ বছরের নয়।
২০১৬-র ২১ জুলাই কুয়েতের মিত্রিবা নামে একটি জায়গায় তাপমাত্রার পারদ স্পর্শ করেছিল ৫৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১২৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট। আর ২০১৭-র ২৮ মে পাকিস্তানের তুরবতে তাপমাত্রা স্পর্শ করেছিল ১২৮.৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৫৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে এখন পর্যন্ত এশিয়ায় রেকর্ড হওয়া তাপমাত্রার মধ্যে দুটিই সর্বাধিক। গেল ৭৬ বছরে এত তাপমাত্রা অন্য কোথাও রেকর্ড হয়নি। আর বিশ্বের মধ্যে এগুলি তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
তবে এতে ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালির ১২৯.২ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা নেই। কারণ ওই জায়গা আগে এর থেকেও বেশি গরম ছিল। ১৯১৩-তে ডেথ ভ্যালিতে তাপমাত্রা ১৩৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে পৌঁছায়। তবে সেই তাপমাত্রা আদৌ কতটা কার্যকরী ছিল, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বিজ্ঞানীদের।
কুয়েত ও পাকিস্তানের পরই রয়েছে তিউনিশিয়ার কেবিলি। ১৯৩১ সালে সেখানে ১৩১ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। সেটাই আফ্রিকার মধ্যে সর্বাধিক তাপমাত্রা।
এ বছর কুয়েতে দিনের বেলায় তাপমাত্রা থাকছে ৬৩ থেকে ৬৪ ডিগ্রির কাছাকাছি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এখন পর্যন্ত এটাই পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। একদিকে দ্রুতগতিতে বাড়ছে তাপমাত্রা অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে চলছে তাপপ্রবাহ। বিশেষ দরকার ছাড়া দিনের বেলাতে রাস্তায় বের হওয়া সেখানকার মানুষ কার্যত বন্ধই করে দিয়েছেন।
এরই মধ্যে প্রবল এ দাবদাহে ১২জনের মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, সবারই হিটস্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদি আরো কয়েকদিন এভাবে চলতে থাকে তাহলে আরো মানুষের মৃত্যু হবে।
গলফ নিউজ জানাচ্ছে, দিনের বেলাতে কুয়েতে তাপমাত্রা থাকছে ৬৩ থেকে ৬৪ ডিগ্রির কাছাকাছি। তবে একটু রোদ কমলে তা কিছুটা নেমে যাচ্ছে। তবে তা মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। বিকেলের দিকে সেখানকার তাপমাত্রা থাকছে ৫২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। যা মোটেই সুখকর কিছু নয়। সৌদির আল-মাজমা শহরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন, শিগগিরই কুয়েত আর সৌদি আরবের এই অসহনীয় তীব্র দাবদাহের হাত থেকে মুক্তির উপায় নেই। তাদের মতে, এবার কুয়েতের গ্রীষ্মকাল বেশ দীর্ঘ হতে চলেছে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে সে দেশের তাপমাত্রা ৬৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসও ছাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।