দেবহাটায় ১৮ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেও বহাল অধ্যক্ষ আনিসুজ্জামান : অভিযোগ দায়ের
দেবহাটা কলেজে তহবিলের ১৮ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেও বহাল থাকা অধ্যক্ষ একেএম আনিসুজ্জামানের বিরুদ্ধে আবারো সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম এবং কলেজের বর্তমান সভাপতি আলী মোর্তজা মো. আনোয়ারুল হককে প্রাননাশের হুমকি দেয়ার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার কলেজের সভাপতি আলী মোর্তজা মো. আনোয়ারুল হক বাদী হয়ে অধ্যক্ষ একেএম আনিসুজ্জামানের বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায় লিখিত অভিযোগটি দায়ের করেন।
দায়েরকৃত অভিযোগটিতে কলেজের সভাপতি আলী মোর্তজা মো. আনোয়ারুল হক বলেছেন, গত ১১ জুন বিকালে তিনি (আনোয়ারুল হক) উপজেলার আব্দুস সালামের মালিকানাধিন রেস্তরার সামনে অবস্থানকালে জামায়তের অর্থদাতা ও নাশকতার ইন্ধনদাতা অধ্যক্ষ একেএম আনিসুজ্জামান উপস্থিত হয়ে বলে কলেজের বিগত সভার রেজুলেশন আমি দিবো না, আমি হাইকোর্ট মানিনা, আত্মসাতের ১৮ লক্ষ টাকা আমি কলেজে ফেরত দিবো না, আমার জামাতা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হবে, ২০১৩ সালে আপনার ওপর যেমন হামলা চালানো হয়েছিলো আবারো তেমনিভাবে প্রস্তুত থাকেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। এ সময় সেখানে সেখানে উপস্থিত থাকা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুস সালাম, আওয়ামী লীগ নেতা নারায়ন চন্দ্র সরকার, মনতাজুর রহমান ময়না সহ স্থানীয়রা তাকে অধ্যক্ষ আনিসুজ্জামানের কবল থেকে রক্ষা করে। এরপর থেকে তিনি ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ইতোপুর্বে ২০১৩ সালে ওই অধ্যক্ষ আনিসুজ্জামান ও বিএনপি নেতা জিয়া পরিষদের সাধারন সম্পাদক ইয়াছিন আলীর ইন্ধনে তার ওপর হামলা চালায় বিএনপি-জামায়ত শিবিরের ক্যাডাররা। মুলত কলেজের ১৮ লক্ষ টাকা আত্মসাত, রেজুলেশন জালিয়াতি, অবৈধ নিয়োগদান, হিসাব কমিটিকে অমান্য, রেজুলেশনের কপি না দিয়ে তালবাহানা, সুবর্নাবাদের রবীন্দ্রনাথের থেকে মোটা টাকা ঘুষ নিয়ে নিয়োগপত্র দেয়া সহ অধ্যক্ষ একেএম আনিসুজ্জামানের সীমাহীন দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার কারনেই তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেছেন সভাপতি আনোয়ারুল হক। তাছাড়া উপজেলা সদরের মুনসুর আলী, আব্দুস সালাম ও আজিজপুরের মিজানুর রহমানকে কলেজে নিয়োগ দেয়ার নাম করেও মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে অধ্যক্ষ আনিসুজ্জামান।
উল্লেখ্য যে কলেজের অধ্যক্ষ আনিসুজ্জামান আত্মসাত কৃত ১৮ লক্ষ টাকা কলেজের তহবিলে জমা না দেয়ার কারনে ইতোপুর্বে সাময়িক বরখাস্তও হয়েছিলো। অন্যদিকে অধ্যক্ষ আনিসুজ্জামানের জামাতা জিয়া পরিষদের সাধারন সম্পাদক, ২০১৩ সালের নাশকতা সৃষ্টিকারী ও একাধিক নাশকতা মামলার আসামী সহকারী অধ্যাপক ইয়াছিন আলীকে নিজের অবসর পরবর্তী ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বানাতে মরিয়া হয়ে উঠলে, বিষয়টির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে সভাপতি আনোয়ারুল হবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সহ তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত পরবর্তী দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ আনিসুজ্জামানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়ে দেবহাটা থানায় লিখিত অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানান কলেজের সভাপতি আনোয়ারুল হক। এ ব্যপারে দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহনের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে পুলিশি তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।