বাচ্চুর অসহায়ত্ব দেখে থেমে থাকলেন না ডিআইজি আব্দুর রাজ্জাক

তিন বছর আগে দূর্ঘটনায় পতিত হয়ে ডান পা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় চায়ের দোকানী বাচ্চু মির্জার। অসহায় পরিবারটি বিভিন্ন মানুষদের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে চিকিৎসাসেবা চালালেও এক সময়ে অভাবের তাড়নায় সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। নিরুপায় হয়ে আর কখনো উঠে দাঁড়াতে পারবে না এমন বাস্তবতা মেনে নেয় বাচ্চু মির্জা ও তার পরিবার।

বাচ্চু মির্জা সাতক্ষীরার তালা সদরের মাঝিয়াড়া গ্রামের মির্জা আজিমুদ্দীনের ছেলে। চায়ের দোকান চালিয়ে দুই ছেলে, অসুস্থ বাবা ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতেন বাচ্চু মির্জা।

ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার তালা সদরের খড়েরডাঙ্গা গ্রামের বেড়াতে আসেন রাজধানীর সচিবালয় সংলগ্ন পুলিশ কন্ট্রোল রুমের অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুর রাজ্জাক। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় মাঝিয়াড়া বাজারে ভ্যানের উপর অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকা মির্জা বাচ্চুকে দেখে তিনি গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। অসুস্থতার খোঁজখবর নেন বাচ্চুর। জড়ো হয় স্থানীয় শতাধিক গ্রামবাসী। সকলের মুখে অসুস্থ বাচ্চুর সার্বিক খোঁজ খবর নিয়ে তাকে চিকিৎসার প্রতিশ্রুতি দেন।

অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুর রাজ্জাকের পরামর্শে শনিবার সকাল ১০ টায় মির্জা বাচ্চুর পায়ের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সঙ্গে রয়েছেন তালা সদরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম নজরুল ইসলাম, ডিআইজি আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী হামিদা বেগম, চাচাতো ভাই আইয়ুব আলী, ডিআইজির সহোদর আব্দুর রউফ, শামীম হোসেন।

অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুর রাজ্জাকের সহোদর আব্দুর রউফ বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা ভাই আকষ্মিক মির্জা বাচ্চুর এমন অসুস্থতার বিষয়টি দেখে নিজেই তার চিকিৎসার জন্য উদ্যোগ গ্রহন করেন। তার কথা মত বাচ্চুকে খুলনা মেডিকেলে নেওয়া হচ্ছে।
তালা সদরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও এই পুলিশ কর্মকর্তার চাচাতো ভাই এস.এম নজরুল ইসলাম বলেন, সৎ ও সাদা মনের মানুষ আব্দুর রাজ্জাক। মির্জা বাচ্চু আর কখনো পায়ে হেঁটে চলাফেরা করতে পারবে না এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। গত তিনটি বছর মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে পার করেছেন। অবশেষে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন আব্দুর রজ্জাক। সেবাই পুলিশের ধর্ম আরেকবার প্রমাণ রাখলেন ডিআইজি আব্দুর রাজ্জাক।

এদিকে, মন্ত্রণালয় সংলগ্ন পুলিশ কন্ট্রোল রুমের অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মির্জা বাচ্চুর সুচিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আন্তরিকতার সঙ্গে মির্জা বাচ্চুর চিকিৎসার বিষয়টি দেখবেন। এছাড়া বিষয়টি আমি নিজে ও খুলনার পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)