বিশ্বকাপে টাইগারদেরই সর্বোচ্চ রান
চলছে ক্রিকেটের সব থেকে বড় আসর আইসিসি বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপ মিশনের শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের পঞ্চম ও নিজেদের প্রথম ম্যাচে বেশ বড় সংগ্রহ গড়ল টাইগাররা।
টস হেরে আগে ব্যাট করে ৩৩০ রানের বড় সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। যা বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সব থেকে বড় রানের রেকর্ড। এই রানের মধ্যদিয়ে প্রোটিয়াদের সামনে ৩৩১ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিল টাইগাররা।
লন্ডনের দ্য ওভালে শুরুতেই ব্যাট করতে আসেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। সঙ্গী ছিলেন হার্ডহিটার সৌম্য সরকার। দুইজনই আজ নিজের সেরাটা দিতে বদ্ধ পরিকর ছিলেন। দেখে খেলছিল বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান। হেসে খেলেই দলীয় অর্ধশত পার করেন টাইগার অপেনাররা।
এদিকে আজকের খেলায় দুইটি রেকর্ড করে ফেললেন সৌম্য সরকার। বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শততম ম্যাচ খেলতে নামেন তিনি।
সেই সঙ্গে ২৯ রান করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩,০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।
দলীয় অর্ধশতক পার করেই বিদায় নেন তামিম ইকবাল। অ্যান্ডি ফেহলুকায়ো বলে ডি ককের হাতে ক্যাঁচ তুলে দেন এই টাইগার ওপেনার। ব্যক্তিগত ১৬ রানে ফিরতে হয় তাঁকে।
এরপর সৌম্য সরকারের সুযোগ ছিল নিজের ক্যারীয়ারে আরো একটি অর্ধশতক যোগ করার। কিন্তু ভাগ্য তার পক্ষে ছিল না। কাছে গিয়েও পারলেন না এই টাইগার ব্যাটসম্যান।
৪২ রানে ক্রিস মরিসের লেফট সাইডের বাউন্স বলে শর্ট করলে তা গ্লাভসে লেগে চলে যায় পিছনে। আর দক্ষ উইকেট রক্ষক কুইন্টন ডি কক ছুটে এসে লাফ দিয়ে তা লুফে নেন। আর এতেই বিদায় নিতে হয় সৌম্যকে।
এরপর মাঠে আসেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম। আগেই মাঠে ছিলেন সাকিব আল হাসান। এই দুই ব্যাটসম্যানে প্রাথমিক চাপ সামলে দলীয় শতক পার করে টাইগাররা। একই ভাবে সাকিব-মুশফিকে ভালো ভাবেই এগোয় বাংলাদেশ।
দলীয় দেড়শ রান ও অতিক্রম করে এই জুটি। দুই ব্যাটসম্যানই তুলে নেয় নিজেদের ব্যক্তিগত অর্ধশতক। ৯৫ বলে ১০০ রানের পার্টানারশিপ তাদের এই ম্যাচে।
চার মেরে নিজের অর্ধশত পার করেন মুশফিক। তারপর সাকিব-মুশিতে দলীয় দুইশত পার করে বাংলাদেশ। বড় সংগ্রহের পথে টাইগাররা হাটলেও হুট করে বাঁধ সাধল ইমরান তাহির। টাইগারদের রাঁধা ভাতে ছাই দিল।
ইমরান তাহিরের একটি বলে বাজেভাবে বোল্ড হয়ে ঘরে ফেরেন সাকিব। যদিও ফেরার আগে নিজের নম্বর ৭৫ এর মত ৭৫ রান করে মাঠ ছাড়েন টাইগার অলরাউন্ডার।
ঘরের ফেরার আগে বিশ্বকাপে টাইগারদের পক্ষে সবচেয়ে বেশি রানের পার্টনারশিপ এখন সাকিব-মুশির।
কিন্তু আবারো টাইগার শিবিরের উপর অভিশাপ হয়ে আসলো সেই ইমরান তাহির। ঠিক আবারো বোল্ড করে ঘরে ফেরানেল মোহম্মদ মিঠুনকে। ফেরার আগে দলকে ২১ রানের ইনিংস উপহার দেন এই ব্যাটসম্যান।
আজ অ্যান্ডি ফেহলুকায়ো চড়াও হন টাইগারদের উপর। ডুসেনের হাতে ক্যাঁচ হয়ে ঘরে ফিরলেন মুশফিক ৭৪ রান করে। বিশ্বকাপে শতক করা হলো না এই টাইগার ডিপেন্ডেবলের। এরপর মাঠে নামেন প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলা মোসাদ্দেক। তার ব্যাটিং ঝড়ে দিক হারিয়ে ফেলে প্রোটিয়ারা।
যদিও শেষের দিকে ক্যাঁচ হয়ে ফেরেন এই ব্যাটসম্যান। যাওয়ার আগে বড় সংগ্রহে ২০ বলে ২৬ রান করে অবদান রেখে যান।
মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদি হাসানে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩০ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। আর এতেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ রানের দেখা পায় এই ম্যাচে। এমনকি ওয়ানডেতেও এই স্কোরই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। মাহমুদউল্লাহ ৪৬ ও মেহেদি হাসান ৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ফেহলুকায়ো, তাহির ও মরিস দুটি করে উইকেট লাভ করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ ৩৩০/৬ (৫০ ওভার)
মুশফিক ৭৮, সাকিব ৭৫, রিয়াদ ৪৬*
ফেহলুকায়ো ৫২/২, তাহির ৫৭/২, মরিস ৭৩/২