শ্যামনগরে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ লবণাক্তটা ও নানা সমস্যা মোকাবেলায় বরাদ্দের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মানসহ লবণাক্তটা ও জলাবদ্ধতা মোকাবেলায় বরাদ্দের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন ও প্রধান মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে শ্যামনগর উপজেলার সিএসআরএল সম্মেলন কক্ষে উক্ত সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। পরে উপজেলার ১২ টি ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পক্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পৃথক পৃথক স্মারকলিপি প্রদান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পদ্মপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান এস আতাউর রহমান।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে বিপর্যস্ত জনপদ গুলোর একটি হচ্ছে শ্যামনগর উপজেলা। গত দশ বছরে এখানে সিডর, আইলাসহ ১০ টি বড় ঘূর্ণিঝড় আঘাত এনেছে। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, আগামী দিন গুলোতে এর সংখ্যা বাড়বে এবং প্রভাব তীব্র হবে। নদী ভাঙনের ফলে এ উপজেলার পদ্মপুকুর, আটুলিয়া, গাবুরা, মুনিাসগঞ্জ, বুগিগোয়ালিনী, কাশিমাড়ি ও কৈখালী ইউনিয়নে মাইগ্রেশনের সংখ্যাও বেশী। পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী সাতক্ষীরা জেলায় আইলা ও সিডর পরবর্তী সময়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে উপকূলীয় জেলা গুলোর মধ্যে সাতক্ষীরা জেলা আগে তলিয়ে যাবে। পরিবেশবীদদের এমন আশঙ্কায় এ জনপদ থেকে নীরব অভিবাসন শুরু হয়েছে। আর লবণাক্তটা এই উপজেলার অন্যতম প্রধান অভিঘাত। সমুদ্র উপকূলবর্তী হওয়ায়
এ উপজেলার মূল জলধারা সমূহ লোনাপানির। প্রধান নদী ইছামতি, কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া, কালিন্দি, মাদার , যমুনা ও রায়মঙ্গল নদীসহ ১২৬টি খাল ও জলমহল রয়েছে। নদী থেকে কৃষি জমি ও চিংড়ি ঘেরে লোনা পানি আনা ও বের করে দেয়ার কাজে এই খাল গুলো ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে খাল গুলো অবৈধভাবে দখল ও ভরাট হওয়ায় কারণে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে লবণাক্তটা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্যামনগরসহ জেলার ৭টি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরকে বাঁচাতে তারা এ সময় ১২ দফা দাবী উপস্থাপন করেছেন। দাবী গুলোর মধ্যে রয়েছে, উপকূলীয় বাধের নতুন ডিজাইন করে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট জোয়ারের উচ্চতা প্রতিরোধে সক্ষম বেড়িবাঁধ দ্রুত নির্মাণের জন্য বরাদ্দ প্রদান, প্রত্যেক ইউনিয়নে জলবায়ু তহবিল গঠনে বরাদ্দ দেয়া, উপকূলবর্তী প্রত্যেক গ্রামে কমপক্ষে দুটি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, সুপেয় পানির সঙ্কট নিরসনে আরও পানির প্লান্ট তৈরিসহ বিভিন্ন দাবী তুলে ধরেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, কাশিমাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, নুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান বখতিয়ার আহমেদ, কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম, গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মুসুদুল হকসহ ১২ ইউপি চেয়ারম্যান।