সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ এ- হাসপাতাল চত্বর থেকে বিপুল পরিমাণ ঔষধ ও ব্যা-ন্ডেজের সন্ধান:তদন্ত শুরু

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ এ- হাসপাতালের কিচেন রুমের পাশে মাটির তলা থেকে বিপুল পরিমাণ ঔষধ ও প্লাস্টার ব্যা-ন্ডেজের সন্ধান মেলার ঘটনায় মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত টিম তদন্ত শুরু করেছেন। সোমবার সকাল ১১ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা ঘটনাস্থল থেকে ওইসব ঔষধ ও ব্যা-ন্ডেজের নমুনা সংগ্রহ করেন।

তদন্ত টিমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামিম হোসেন, ডাঃ প্রবীর দাস ও ডাঃ আক্তারুজ্জামান ছাড়াও পুলিশের কয়েকজন উপপরিদর্শক উপস্থিত ছিলেন।

তবে নমুনা সংগ্রহকালে ভিডিও ফুটেজ নিতে গেলে তেড়ে ওঠেন তদন্ত টিমের প্রধান মেডিকেল কলেজের নিওরোলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ রুহুল কুদ্দুস। বাধ্য হয়ে সাংবাদিকদের ফুটেজ নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে প্রাথমিক তদন্ত শেষে ডাঃ রুহুল কুদ্দুস বলেন, হাসপাতাল সুপার মহোদয়ের নেতৃত্বে যে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে তার সভাপতি হিসেবে তিনি ও জেলা প্রশাশকের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত আছেন। সবাই মিলে সাইট ভিজিটি করলাম। স্যাম্পল সংগ্রহ করলাম। অধিকাংশরই ব্যাচ, ডেট ও ম্যানুফ্যাকচারিং ও ডেট ওফ এক্সপেয়ারি পাঠোদ্ধার করা সম্ভব নয়। দু’ একটার ব্যাচ নাম্বার ও এক্সপায়ারি ডেট উদ্ধার করা যাবে। তা দিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে। স্টক রেজিস্টার ও ব্যাচ নম্বর দিয়ে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করবো। পরেচেজিং অথোরিটি ও কোন সালে কেনা হয়েছিল তা বের করার চেষ্টা করবো। ডেট এক্সপেয়ার হলে কর্ণোভেশন করা হয়।

যদিও আমাদের কাছে কাছে কর্ণোভেশনের কোন আদেশ নেই। মাটির তলায় এ ঔষধ রাখার উদ্দেশ্য আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। আইনপ্রয়োগকারি সংস্থা তদন্ত করলে সব কিছু বেরিয়ে আসবে। কি কি আইটেম ছিল, কবে পারচেজ করা হয়েছিল এবং বেসরকারিভাবে পারচেজ করা হয়েছিল এ গুলো বের করা হবে।

সাংবাদিকদের ভিডিও ফুটেজ নিতে না দেওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আগে আপনারা স্টিল ফটো নিয়েছেন, ভিডিও চিত্র নিয়েছেন। তদন্তকালে সাংবাদিকরা থাকলে নানা প্রশ্ন করতে পারেন। তাই ঠাণ্ডা মাথায় তদন্তের স্বার্থে সাংবাদিকদের তদন্তকালে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত,শনিবার বিকেলে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিছনে কিচেনের পাশে মাটির তলায় চাপা দেওয়া হাসপাতালে সরবরাহকৃত এক্সরোল, এসেনসিয়াল ড্রাগের ফলিক এসিড, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এন্টিবায়োটিক এরিথ্রোমাইসিন -৫০০এমজি, এসকেএফ এর কিলম্যাক্স-২৫০এমজি সহ বিভিন্ন জীবনদায়ী ঔষধ পাওয়া যায়। ওইসব ঔষধের অধিকাংশ স্টিপের উপর ডেট অফ এক্সপেয়ারী হিসেবে ১৯২২ সালের সেপ্টেম্বর লেখা ছিল। একটি পাচারকারী চক্র ওই ঔষধ শুক্রবার রাতে বাইরে পাচার করতে না পেরে স্থানীয়দের তাড়া খেয়ে হাসপাতালের পিছনে মাটি দিয়ে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে এবং ভোরে বৃষ্টি হওয়ায় মাটি বসে যেয়ে ওই ঔষধ বেরিয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়রা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন।

এ ঘটনায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে রোববার পাঁচ সদস্যের ও মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ঘটনাস্থল পাহারায় দু’জন আনছার সদস্য নিয়োগ করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে রোববার থানায় জিডি করা হয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)