ক্যাম্প থেকে পালিয়ে দালালের ফাঁদে রোহিঙ্গারা
কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে হঠাৎ করেই সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। বিভিন্ন কৌশলে ক্যাম্প থেকে পালিয়ে দালালের ফাঁদে পড়ছে তারা।
চার মাসে কক্সবাজার উপকূলে পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রোহিঙ্গাদের ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে তারাও।
উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় যাদের আত্মীয়-স্বজন রয়েছে তারাই উন্নত জীবনের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশটিতে পাড়ি জমায়। এতে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় দালালরা প্রলোভন দেখাচ্ছে তাদের।
সর্বশেষ ১৭ মে রাতে পেকুয়া থেকে মালয়েশিয়াগামী রোহিঙ্গাদের আটকের ঘটনায় জড়িত ১১ দালালকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এরমধ্যে ছয় জনই স্থানীয়। তারা হলেন- মো. টিপু, আবদুল গণি, মো. মনছুর, মিজবাহ উদ্দিন, জসিম উদ্দিন, আব্দুল কাদের।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, পুরনো মানব পাচারকারীরাই আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এরমধ্যে টেকনাফের মৌলভী আজিজ, মৌলভী রফিক, মৌলভী মুজিব, শাহপরীর দ্বীপের কবিরা, ফিরোজ, ইসলাম, পোয়া মাঝি, নুর হাকিম মাঝিসহ কয়েক জনকে চিহ্নিত করেছে তারা। রোহিঙ্গাদের দেড় লাখ থেকে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে মালয়েশিয়াগামী ট্রলারে তুলে দিচ্ছে চক্রটি। এরমধ্যে ১৫-২০ হাজার টাকা নগদ ও গন্তব্যে পৌঁছে বাকি টাকা পরিশোধের চুক্তি করা হয়।
রোহিঙ্গা শিবিরের মাঝিরা জানান, যেসব রোহিঙ্গাদের পাচার করা হচ্ছে তাদের অধিকাংশই নারী। মালয়েশিয়া ও আশপাশের দেশে বিয়ে, পতিতাবৃত্তিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করার জন্য নানা প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে নিয়ে যাচ্ছে মানব পাচারকারী চক্র।
কক্সবাজারের এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন জানান, রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প থেকে পালানো ঠেকাতে পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা সজাগ রয়েছে। শুকনো মৌসুম হওয়ায় রোহিঙ্গারা পালানোর চেষ্টা করছে। ক্যাম্প উন্মুক্ত হওয়ায় তাদের আটকে রাখা যাচ্ছে না।
এসপি মাসুদ হোসেন আরো জানান, রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে ক্যাম্পে জরুরি ভিত্তিতে কাঁটাতারের বেড়া ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে হবে। এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনারকে প্রস্তাব দেয়া হবে।